মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ এবং ফ্লোর প্রাইসের কারণে লেনদেন খরা চলছে দেশের শেয়ারবাজারে। এই লেনদেন খরার মধ্যেই রোববার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রেকর্ড আড়াই হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। যা ২০১০ সালের পর সর্বোচ্চ।
লেনদেনের এই উল্লম্ফনের পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে বহুজাতিক কোম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন। প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ার আরেক বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিলিভার কিনে নিচ্ছে।
ওই ঘোষণার অংশ হিসেবেই রোববার ডিএসইর ব্লক মার্কেটে গ্লাক্সোস্মিথক্লাইনের শেয়ার লেনদেন হয়। ব্লকে গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনেরই দুই হাজার ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ সাত হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এর ফলে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৫৪৩ কোটি ২৫ লাখ ৫২ হাজার টাকা। যা ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ। ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর ডিএসইতে দুই হাজার ৭১০ কোটি টাকার লেনদেন হয়। এরপর গত সাড়ে ৯ বছরে ডিএসইতে আর আড়াই হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়নি।
রেকর্ড লেনদেনের দিনেও বরাবরের মতো লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অবশ্য ডিএসইতে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে কমেছে তার থেকে কম। ফলে সূচক কিছুটা বেড়েছে।
লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ৩ হাজার ৯৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৩১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ ২ পয়েন্ট বেড়ে ৯২১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৪৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২টির। আর ২৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে আর বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ৯ কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনের ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। চার কোটি ৮৬ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে এর পরের স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, লিন্ডে বিডি, সিটি ব্যাংক, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, এসিআই এবং একমি ল্যাবরেটরিজ।
লেনদেনে বড় ধরনের উন্নতি হয়েছে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। বাজারটিতে লেনদেন বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো।
এদিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৫১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এরমধ্যে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। বাজারটির সার্বিক সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২১ পয়েন্ট। লেনদেনে অংশ নেয়া ১৩৭ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ২৯টির, কমেছে ৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৯৯টির।