লিবিয়ায় কর্মী পাঠানোর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখতে চায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

imagesলিবিয়ায় উদ্বেগজনক নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে দেশটিতে কর্মী পাঠানোর নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখতে চায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি আদালত এক রায়ে যেসব কর্মী ঝুঁকির দায়িত্ব নিজেরা নিতে প্রস্তুত তাদের লিবিয়া যাওয়ার জন্য ছাড়পত্র দিতে বলেছে।
রিট পিটিশনের রায়ে এটাও বলা হয়, কোনো কিছু ঘটলে সরকারের ওপর দায় চাপানো যাবে না। কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, রিটের এ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করা হবে। কারণ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করে, লিবিয়ার পরিস্থিতি বিপজ্জনক। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো বাংলাদেশী কর্মী লিবিয়ায় পাঠানো উচিত হবে না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, লিবিয়ায় একাধিক সরকার নিজেদের বৈধ দাবি করছে। হানাহানির মাত্রা দিনের পর দিন বাড়ছে। ফলে কর্মীদের লিবিয়ায় যাওয়ার অনুমতি দেয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া কর্মীরা লিবিয়ায় গিয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতি দেখে আরও বড় ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে নৌকাযোগে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করছে। অনেকে সাগরে ডুবে মারাও যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে লিবিয়ায় কর্মী না পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের ওপর চাপ দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এসব কারণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনই লিবিয়ায় কর্মী পাঠানোর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আগ্রহী নয়। নিরাপত্তাজনিত কারণে বাংলাদেশ সরকার গতবছরের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে লিবিয়ায় কর্মী পাঠানো বন্ধ রেখেছে। কিন্তু বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্টদের সংগঠন বায়রা এ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। এরই মধ্যে গত মার্চের শেষ সপ্তাহে বেনগাজিতে গুলিতে তিনজন বাংলাদেশী নিহত হন। তারপর সরকারের পক্ষ থেকে লিবিয়ায় নতুন করে কোনো কর্মী না পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের ফের স্মরণ করিয়ে দেয়।
লিবিয়ায় কর্মী পাঠানোর নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে লিবিয়ায় যেতে ইচ্ছুক সাইফুল ইসলাম গং হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। ৩ এপ্রিল রিট আবেদনের রায় দেন আদালত। রায়ে কর্মসংস্থানের জন্য যারা লিবিয়ার দূতাবাস থেকে ভিসা সংগ্রহ করেছেন, তাদের ঝুঁকি নিজেরা নিয়ে এবং তাদের কিছু ঘটলে সরকারের ওপর দায়িত্ব না চাপিয়ে যেতে ইচ্ছুকদের লিবিয়ায় যাওয়ার জন্য অনাপত্তি সনদ এবং ছাড়পত্র দেয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন।
হাইকোর্টের এ রায়ের পর পরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রায়ের রিভিউ আবেদনের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রিভিউ আবেদনের বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.