সিটিসেল থেকে পাওনা ৪৪৯ কোটি টাকা আদায় করতে অবশেষে কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বুধবার বিটিআরসির সহকারি পরিচালক হাসিবুর রহমান ঢাকা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে পিটিশনটি জমা দিয়েছেন। মামলাটি পাবলিক ডিম্যান্ড রেকভারি অ্যাক্ট ১৯১৩-এর আওতায় করা হয়েছে।
বিটিআরসি জানিয়েছে, পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ওই মামলায় সিটিসেল এবং প্রতিষ্ঠানটির ১০ জন পরিচালককে অভিযুক্ত করেছে রেগুলেটর কমিশন। বিটিআরসির আইনজীবী কামরান খান এ ব্যাপারে জানিয়েছেন, বহুবার সময় বৃদ্ধি করার পরেও সিটিসেল তাদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে। ফলশ্রুতিতে টাকা উদ্ধার করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এখন আদালত তাদের এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা করতে বলবেন।
বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল অপারেটর হিসেবে ১৯৯৩ সালে সিডিএমএ প্রযুক্তি নিয়ে যাত্রা শুরু করে সিটিসেল। এখন প্রতিষ্ঠানটি জিএসএম প্রযুক্তিতে কনভার্ট হতে চেষ্টা করছে। তবে আগের পাওনা পরিশোধে গড়িমসি করার কারণে বিটিআরসি এ প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে। সিটিসেলের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, এখনও প্রতিষ্ঠানটির ৪৪.৫৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক সিঙ্গাপুরের সিংটেল, ৩৭.৯৫ শতাংশ মালিক প্যাসিফিকস মটরস লিমিটেড এবং ১৭.৫১ শতাংশের মালিক কোম্পানির স্টেকহোল্ডাররা।
বিটিআরসির সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী সিটিসেলের গত মার্চ পর্যন্ত মোট মোবাইল গ্রাহক রয়েছে ৭ লাখ ৯৯ হাজার।
প্রসঙ্গত, সিটিসেল থেকে টুজি লাইসেন্স নবায়ন এবং দুটি স্পেকট্রামের কিস্তি বাবদ ৩৭১ কোটি ৩১ লাখ টাকা, বাৎসরিক ফি বাবদ ১২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, রেভিনিউ শেয়ারিং বাবদ ২৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং সামাজিক বাধ্যবাধকতা তহবিল বাবদ ১০ কোটি ৩৭ লাখ টাকাসহ মোট প্রায় ৪৪৯ কোটি টাকা পায় বিটিআরসি। কয়েক দফা এ ব্যাপারে সিটিসেলকে নোটিশ দেওয়া হলেও তারা কোন প্রকার টাকা পরিশোধ না করে সময় বৃদ্ধির আবেদন করে। কিন্তু বিটিআরসি সময় বৃদ্ধি না করে তাদের লাইসেন্স বাতিল করারও হুংকার দিয়েছিল। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। এর মধ্যে জানা গেছে, সিটিসেল বিক্রি হওয়ার পক্রিয়া চলছে। নতুন বিনিয়োগ আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করছে প্রতিষ্ঠানটি।