‘নব আনন্দে জাগো আজি নব রবি বিকিরণে, শুভ্র সুন্দর প্রীতি উজ্জ্বল নির্মল জীবনে। এসো, এসো, এসো, হে বৈশাখ।’ সকল না পাওয়ার বেদনাকে ধুয়ে মুছে, প্রকৃতিকে অগ্নিস্নানে সূচি করে তুলতেই আসে বৈশাখ। পহেলা বৈশাখ এখন আর বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ নেই, ছড়িয়ে পড়েছে দেশ থেকে দেশান্তরে প্রবাসের শহরে শহরে। নতুন স্বপ্ন, উদ্যম ও প্রত্যাশার আলোয় রাঙানো নতুন বাংলা বছরকে বরণ করে নিলেন মালয়েশিয়া প্রবাসীরা।
মালয়েশিয়া বাংলাদেশ ফোরাম অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানসূচির মধ্যদিয়ে জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করা হয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪২৩। রোববার কুয়ালালামপুরের ক্রাফট কালচারাল সেন্টারে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়া ট্যুরিজম অ্যান্ড কালচারাল মন্ত্রী ওয়াইবি দাতু শ্রী মো. নাজরি বিন আব্দুল আজিজ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রদূত মো. শহিদুল ইসলাম, ক্রাফট মালয়েশিয়ার ডিরেক্টর জেনারেল পোয়ান হাজা জুরাইদা বিনতে মুক্তার। বর্ষবরণ উৎসবের সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফকরুল ইসলাম শুভ। মালয়েশিয়ায় বাঙালিদের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে এই প্রথম সে দেশের একজন মন্ত্রী প্রধান অতিথি হয়ে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশিদের ভ্রাতৃত্ববোধ, দেশের প্রতি নাড়ির টান দেখে মন্ত্রী অভিভূত হয়েছেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান উপস্থাপক আব্দুন নূর তুষার। তাকে সহযোগিতা করেন মালয়েশিয়ার ইউএম ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী নাজিফা ও মইনুল।
সংগঠনের আয়োজনে ছিল বৈশাখী মেলা, পিঠা-পুলি, মনোমুগ্ধকর নাচ-গান। অনুষ্ঠানে প্রবাসি বাঙালিদের পাশাপাশি মূলধারার প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা এবং কমিউনিটি নেতাদের উপস্থিতি ছিলো দেখার মতো। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সার্বজনীন উৎসব নববর্ষ উদযাপনে একসঙ্গে সবাই গেয়েছেন ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’।
মেয়েরা খোঁপা আর বেণীতে ফুল গুঁজে রঙ-বেরঙের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ পোশাক পরে হাতভরা চুড়ি আর ছেলেরা পাঞ্জাবি, ফতুয়া পরে আনন্দে মেতে উঠেছিল। অনুষ্ঠানে প্রবাসীদের জন্য ইলিশ মাছ, পান্তা, সাদা ভাত, ডাল, আলু ভর্তা, বেগুন ভর্তা, চেপা ভর্তা, ব্রকলি ভর্তা, পায়েস, কাঁঠাল বিচি ভর্তা, লাল মরিচ ভাঁজাসহ রকমারি দেশীয় খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল।
মেলায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন সঙ্গীত শিল্পী ফরিদা পারভীন, শূন্য ব্যান্ড শিল্পীর শিল্পীরা। আরো উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি হাইকমিশনার মো. ফয়সাল আহমেদ, কাউন্সিলার (শ্রম) মো. সায়েদুল ইসলাম, কন্স্যুলার (পলিটিক্যাল) রইস হাসান সারোয়ার, দূতাবাসের কমার্শিয়াল উইং ধনঞ্জয় কুমার দাস, ফার্স্ট সেকেটারি (শ্রম) শাহিদা সুলতানা, ফার্স্ট সেক্রেটারি মুশরাত জেবিন ও কমিশনের কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ডা. শংকর পোদ্দার, প্রফেসর ড. মোহাম্মাদ আবুল বাশার, অ্যাসোসিয়েশনের সকল সদস্য ও মালয়েশিয়ায় ভিবিন্ন কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।