বিশ্ববাজারে মহামারির আগেও জ্বালানি তেলের চাহিদা ছিল অনেক বেশি। উত্তোলনও ছিল বেশি। সরবরাহ ঘাটতি না থাকায় বাজারে নিম্নমুখী ছিল জ্বালানির দর। কিন্তু চাহিদার চেয়ে বেশি তো আর কেউ জ্বালানি তেল কিনে মজুদ করবে না, তাই নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী উত্তোলন হলেও কমছিল দাম। এরপরই তেলের উত্তোলন কমানোর সিদ্ধান্তে আসে আন্তর্জাতিক জ্বালানি তেল উত্তোলক ও রফতানিকারক দেশগুলো।
কিন্তু করোনা মহামারিতে আন্তর্জাতিক আর অভ্যন্তরীণ পর্যটন ব্যবস্থা বিপর্যন্ত হওয়ায় ২০২০ সালের পুরোটাই খরা গেছে জ্বালানির বাজারে। কার্গো বিমান আর জাহাজ পরিবহন চালু থাকলেও স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে তা কম ছিল। ২০২১ সালে এসে কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে জ্বালানির বাজার।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা আইইএ’র রিপোর্ট বলছে, ২০২৬ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকবে জ্বালানির চাহিদা।
যদিও জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মত, নবায়নযোগ্য জ্বালানির উদ্ভাবন আর ব্যবহার বাড়ায় জ্বালানি তেলের চাহিদা খেই হারিয়েছে। তবে জ্বালানি কোম্পানিগুলোর জন্য আশার খবর হলো, এশিয়ার জ্বালানির বাজার চাঙ্গা হবে আগামী কয়েক বছর। সাথে অনেক দেশের তেলের বাজার মহামারির আগের অবস্থায় ফিরবে। আইইএ’র প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা গেছে, আগামী ২ বছরেই মহামারির আগের অবস্থায় পৌঁছাবে জ্বালানির বাজার।
২০২৩ সাল নাগাদ জ্বালানির উত্তোলন বেড়ে ১০ কোটি ব্যারেলে পৌঁছাতে পারে। চাহিদা এসময়টায় সবচেয়ে বেশি থাকবে এশিয়ার। এখনো জ্বালানির বাজার উন্নত দেশে স্থিতিশীল হয়নি। কারণ এসব দেশে ভ্রমণে এখনো নিষেধাজ্ঞা আছে, আবার নাগরিকরা বৈদ্যুতিক গাড়ি আর নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে ঝুঁকছে। তবে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বরাবরই জ্বালানির চাহিদা বেশি থাকবে চীনের।
সংস্থাটি বলছে, আগামী ৫ বছরে বিশ্বের মোট জ্বালানি তেলের চাহিদার ৯০ শতাংশই হবে এশিয়ার দেশগুলোর। জনসংখ্যা বাড়ায় চীন আর ভারতে চাহিদা বাড়বে জ্বালানি তেল ব্যবহারের। তবে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বিভিন্ন দেশের ওপর। সেইসাথে বাড়ছে সৌরবিদ্যু প্রকল্প।
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়ছে ইউরোপ, চীন আর যুক্তরাষ্ট্রে। করোনার মধ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার আরো বেড়েছে। এতে করে নির্ধারিত সময় পরে জ্বালানি তেলের বাজারে ভাটা পড়বেই। কারণ পরিবেশের স্বার্থে জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প খুঁজতেই হবে।