অভ্যন্তরীণ রুটে সফলভাবে ফাইট পরিচালনার পর সম্প্রতি আন্তর্জাতিক রুটে পাখা মেলা ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সকে যাত্রীরা তাদের পছন্দের তালিকায় রাখছেন। কারণ একটাইÑ অন্যান্য এয়ারলাইন্সের চেয়ে এ এয়ারলাইন্সটি শিডিউল অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে এবং নিরাপদে যাত্রীদের গন্তব্য পৌঁছে দিচ্ছে। এয়ারলাইন্স সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘ফাই ফাস্ট ফাই সেফ’ স্লোগানকে সামনে রেখে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বহরে চলতি বছর দু’টি বোয়িংসহ আরো তিনটি উড়োজাহাজ যোগ হতে যাচ্ছে।
অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের বিমান পরিবহন খাতে ইউএস-বাংলা হচ্ছে সর্বশেষ সংযোজন। এরই মধ্যে শিডিউল মোতাবেক না চলার কারণে দেশের প্রথম বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জিএমজি এয়ারলাইন্সসহ কিছু এয়ারলাইন্স বন্ধ হয়ে গেছে। তারা বলছেন, দেশের অ্যাভিয়েশন শিল্প খুব বেশি এগোতে পারেনি। তারপরও দেখছি, অনেকটা সফলতার সাথেই ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এগিয়ে যাচ্ছে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে ঢাকা-কক্সবাজার, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে নিয়মিত যাতায়াতকারী দাউদ নামের এক যাত্রী গতকাল এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার বাড়ি কক্সবাজারে। চট্টগ্রামেও ব্যবসায় আছে। সেই সুবাদে আমি নিয়মিত ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে যাতায়াত করি। টিকিট কেনা থেকে শুরু করে এয়ারলাইন্সটির সার্বিক সেবায় আমি মুগ্ধ। যতবার যাচ্ছি ততবারই দেখেছি, তারা জাস্ট টাইমে বিমান ছাড়ছে। এতে আমাদের ব্যবসায়িক কাজকর্ম করতে কমফোর্ট ফিল করছি। এটি শুধু দাউদের কথা নয়, যারা প্রতিনিয়ত ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সে ভ্রমণ করছেন তাদের বেশির ভাগেরই একই কথা।
সিভিল অ্যাভিয়েশনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স অভ্যন্তরীণ রুটে ফাইট অপারেশন শুরু করে। ২০১৪ সালে অভ্যন্তরীণ রুটে যেখানে যাত্রী সংখ্যা ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পায়, সেখানে এ এয়ারলাইন্সটি ফাইট অপারেশনে আসার পর অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীর সংখ্যার হার ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স গত দুই বছরে ১৩ হাজার ৮০০ ফাইট পরিচালনা করেছে, যা অভ্যন্তরীণ রুটে রেকর্ড বলে সিভিল অ্যাভিয়েশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গতকাল ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ডিজিএম (মার্কেটিং সাপোর্ট অ্যান্ড পিআর) মো: কামরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, যাত্রীদের প্রত্যক্ষ ভোটে অভ্যন্তরীণ রুটে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স ‘বেস্ট এয়ারলাইন অব দ্য ইয়ার-২০১৫’ নির্বাচিত হয়েছে। ‘ফাই ফাস্ট-ফাই সেফ’ স্লোগান নিয়ে যাত্রা শুরু করা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ফাইট পরিচালনায় সর্বাধিক ৯৮.৭ শতাংশ অনটাইম পারফরম্যান্স প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জিইসি মোড় পর্যন্ত, যশোর বিমানবন্দর থেকে খুলনার শিববাড়ী মোড় পর্যন্ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ওয়াই-ফাইযুক্ত বাস সার্ভিস চালু করেছে। এ ছাড়া সৈয়দপুর থেকে দিনাজপুর ও রংপুর পর্যন্ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মাইক্রোবাস সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে।
অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আগামী মাসের মধ্যে দু’টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট ও একটি ড্যাশ ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট বিমান বহরে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে কলকাতা, পারো, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক রুটে ফাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স আন্তর্জাতিক রুটে বর্তমানে ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে নিয়মিত চলাচল করছে।