বিশ্বের সবচেয়ে দুর্লভ ও অজ্ঞাত পাসপোর্ট কোনটা? এই পাসপোর্ট কোন দেশের? ইউরোপের সমুদ্রবর্তী দ্বীপ রাষ্ট্র মাল্টার সর্বভৌম সামরিক রীতিতে পরিচালিত একটি ধর্মীয় সংঘ (সোভার্ন মিলিটারি অর্ডার অব মাল্টা) তার সদস্যদের একটি বিশেষ ধরনের পাসপোর্ট দেয়। ধারণা করা হয়, এই পাসপোর্টই হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে অজ্ঞাত ও দুর্লভতম পাসপোর্ট।
মাল্টার এই ক্যাথোলিক সংগঠন খ্রিস্টান সভ্যতার সবচেয়ে পুরাতন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। ১১১৩ সালে পোপ প্যাসকাল একে সর্বভৌম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি নিরপেক্ষ, সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক একটি সংঘ। শুধুমাত্র পৃথিবীর মানবিক সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামায় এটি। যেমন বর্তমান সময়ে এই সংঘ মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইজিয়ান সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে আসা লাখো শরণার্থীদের স্বাস্থ্য ও অন্যান্য সেবা প্রদানে ব্যস্ত রয়েছে।
এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান একমাত্র স্থায়ী পাসপোর্ট দেয় এর সর্বোচ্চ কর্মকর্তা বা দ্য গ্র্যান্ড মাস্টারকে। সংঘের আরও ১২ জনের কাছে ৫ বছর মেয়াদী অস্থায়ী পাসপোর্ট থাকে। এর মধ্যে রয়েছেন গ্র্যান্ড কমান্ডার (আধ্যাত্মিক বিভাগের প্রধান), গ্র্যান্ড চ্যান্সেলর (প্রধানমন্ত্রী) এবং গ্র্যান্ড হসপিটালার (স্বাস্থ্য ও সামাজিক বিভাগের প্রধান)।
প্রতিষ্ঠানটির বিশ্বের ১০৬টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কও রয়েছে। এতে করে বিশ্বের মানবিক দুর্যোগ প্রবণ অঞ্চলগুলোতে নজর রাখতে পারে এটি। ১০৪৮ সালে মাল্টাতে সংঘটির সূচনা হয়েছিল ক্রুসেডর নাইটস হসপিটালার হিসেবে।
বর্তমানে এই ক্যাথোলিক প্রতিষ্ঠান একটি দাতব্য সংগঠন হিসেবে কাজ করে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার জন্য। এই সংঘে ১৩ হাজার ৫শ নাইটস (পুরুষ), ডেইমস (নারী) এবং যাজক রয়েছেন। সেই সাথে রয়েছেন ৮০ হাজার স্থায়ী স্বেচ্ছাসেবক এবং ২৫ হাজার কর্মচারী।
বিশ্বের যে সমস্ত দেশ এই সংগঠনের পাসপোর্ট গ্রহণ করে না তার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং নিউজিল্যান্ড। সংগঠনের বর্তমান গ্র্যান্ড মাস্টারের নাম ফ্রা ম্যাথিউ ফেস্টিং। এই পদে তিনিই দ্বিতীয় ইংরেজ বংশোদ্ভূত ব্যক্তি।