ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই আজ রোববার বেলা পৌনে ৩টায় নতুন করে একটি ফ্লাইট যুক্ত করেছে সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এ ব্যাপারে সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে মন্ত্রণালয়।
জানা যায়, এ বছর মোট তিনটি এয়ারলাইন্স হজযাত্রী পরিবহন করছে। এর মধ্যে সৌদি মালিকানাধীন সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স অন্যতম। মোট ২৩ হাজার ৫৪৫ জন হজযাত্রী পরিবহন করার কথা রয়েছে তাদের।
সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের আজ রোববার (১২ জুন) পূর্বনির্ধারিত একটি ফ্লাইট ছিল।
কিন্তু তারা কাউকে কিছু না জানিয়ে হঠাৎ করেই আজ বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে এসভি ৩৮০৩ নামে আরো একটি ফ্লাইট যুক্ত করেছে।
বিষয়টি হজ অফিসের মাধ্যমে অনানুষ্ঠানিকভাবে ধর্ম মন্ত্রণালয় জানার পর এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে তারা। এ
ব্যাপারে গতকাল ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ-১ শাখার উপসচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের কান্ট্রি ম্যানেজারকে সতর্ক করে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।
এতে তিনি বলেন, এয়ারলাইন্সগুলোর সাথে এর আগে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো ফ্লাইট বাতিল বা সংযুক্ত করা যাবে না। কিন্তু সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়াই একটি ফ্লাইট যুক্ত করেছে; যা রুট টু মক্কা কর্মসূচি বাংলাদেশ পর্বের ইমিগ্রেশন এবং এভিয়েশনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। এতে সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় অন্তরায় সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ বিমানের আজ বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে একটি ফ্লাইট রয়েছে। এ ফ্লাইটটি পরিচালনায় ব্যত্যয় ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠিতে সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সকে এ বিষয়ে ব্যখ্যা প্রদান করার জন্য বলা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করা যাবে না বলে সতর্ক করা হয়েছে।
ই-ভিসা প্রিন্ট নিয়ে জটিলতা : হজযাত্রীদের জন্য সৌদি আরব সরকারের নির্ধারিত পদ্ধতিতে অনলাইনে ভিসা আবেদন করে হজ এজেন্সিগুলো। ভিসা অনুমোদন হলে অনলাইন থেকে সেই ভিসা প্রিন্ট করতে হয়। আর এই ই-ভিসা প্রিন্ট করা নিয়ে জটিলতায় পড়েছে হজ এজেন্সিগুলো। অনলাইনে আবেদন করে ভিসা পাওয়া গেলেও অনেক সময় তা প্রিন্ট করা যাচ্ছে না। এ সঙ্কট দ্রুত সমাধান না হলে হজযাত্রায় বিঘœ ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা হজ এজেন্সিগুলোর।
জানা গেছে, হজযাত্রীদের জন্য সৌদি আরব ২০১৫ সাল থেকে অনলাইনে ভিসা আবেদন ও ই-ভিসা চালু করে। সেই বছর থেকেই ই-ভিসা আবেদন ও ভিসা পাওয়া নিয়ে নানা জটিলতায় পড়তে হয়েছে। ২০১৫ সালে সার্ভারে ত্রুটির কারণে ভিসা পাওয়ায় অনেক হজ যাত্রী শিডিউল ফ্লাইটে যেতে পারেননি। এরপর প্রতি বছরই আবেদন করা থেকে ভিসা প্রিন্ট করা পর্যন্ত নানা ধরনের জটিলতায় পড়তে হয়েছে।
এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় চার হাজার জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৩ হাজার ৫৮৫ জনসহ সর্বমোট ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। ১০ জুন পর্যন্ত চার হাজার ২২ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। আর মোট হজযাত্রীর ২১ দশমিক ৮৩ শতাংশের ভিসা হয়েছে।
হজ এজেন্সিগুলো জানিয়েছে, অনলাইনে ভিসা আবেদন করার পর ভিসা ইস্যু হলে সেটি প্রিন্ট করতে হয়। কিন্তু কোনো কোনো সময় ভিসা প্রিন্ট হয় না।
তখন সেই সমস্যা সমাধান করতে সৌদি দূতাবাসে যেতে হয়। ফ্লাইটের আগে ভিসা না হলে অনেকের হজযাত্রা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
ভিসা প্রিন্টিং সিস্টেম সৌদি আরব ঠিক না করলে এ নিয়ে ভোগান্তি দূর হবে না। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হচ্ছে শুক্র ও শনিবারসহ ছুটির দিনগুলোতে। ছুটির দিনে সৌদি দূতাবাস খোলা না থাকায় সেদিনগুলোতে কোনো কাজ হয় না।