প্রবাসীদের বিশেষ সেবা দিতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ বিএমইটির

আসন্ন ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপনে দেশে ফিরতে শুরু করেছেন প্রবাসী কর্মীরা। এ ধারা অব্যাহত থাকবে আগামী কয়েক দিন। এ অবস্থায় দেশে ফেরা প্রবাসী কর্মীদের বিশেষ সেবা দিতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)।

দেশে ফেরা প্রবাসী কর্মীদের বিশেষ সেবা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে সোমবার (১৭ এপ্রিল) হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালককে চিঠি দেয় বিএমইটি। বিএমইটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক এ এইচ এম আনোয়ার পাশা স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘দেশব্যাপী চলমান দাবদাহের মধ্যে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রতিদিন সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার প্রবাসী দেশে ছুটিতে আসছেন। অভিবাসী কর্মীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ প্রেক্ষাপটে প্রত্যাগত কর্মীগণকে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারার আনন্দ দিতে বিমানবন্দর থেকে দেওয়া সকল সেবা সহজীকরণের মাধ্যমে দায়িত্বে নিয়োজিত সকলকে বিশেষ সেবাদানের জন্য অনুরোধ করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।’

জানা গেছে, বিমানবন্দরে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ এবং কাস্টমসকেও চিঠি দিয়েছে বিএমইটি। এ বিষয়ে অগ্রগতি দেখতে বুধবার (১৯ এপ্রিল) বিমানবন্দর পরিদর্শন ও প্রত্যাগত কর্মীদের ঈদের শুভেচ্ছা জানাবেন ওয়েজ অনার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক এবং বিএমইটি মহাপরিচালক।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে জানান, যাত্রীদের সেবার মান উন্নয়নে প্রতিনিয়তই কাজ চলছে। এরই মধ্যে যেগুলোর সুফলও যাত্রীরা পেতে শুরু করেছেন। এ জন্য নিয়মিতই বিমানবন্দরে কার্যক্রম পরিচালনা করা দেশি-বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো নিয়ে বৈঠক করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে দেশে আসা প্রত্যেক প্রবাসীই স্বজনদের জন্য অনেক উপহার আনেন। কোনো যাত্রীর লাগেজ যাতে মিসিং না হয় সে জন্য এয়ারলাইনসগুলোকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি এপিবিএন, ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও এ বিষয়ে বৈঠক করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, একটি উড়োজাহাজ আকাশে ওড়ার ক্ষেত্রে ভার বহনের সক্ষমতা নির্ধারিত। উড়োজাহাজের ওজন, যাত্রীদের ওজন, লাগেজের ওজন, জ্বালানির ওজন—সব সমন্বয় করে আকাশে ওড়ার জন্য নির্ধারিত ওজন ঠিক রেখে ফ্লাইটের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তবে এর তারতম্য হলেই এয়ারলাইনসগুলো যাত্রী আনলেও লাগেজ রেখে আসে।

গত বছর ঈদুল ফিতরের ছুটিতে আসা প্রবাসীরা লাগেজ লেফট বিহাইন্ড হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছিলেন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোকে চিঠি দিয়েছিল বেবিচক। চার ধরনের শাস্তির বিষয় উল্লেখ করে সেই চিঠিতে বলা হয়, যেসব এয়ারলাইনস যাত্রীর লাগেজ লেফট বিহাইন্ড বন্ধ করতে পারবে না, শাস্তি হিসেবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তাদের সাপ্তাহিক ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সি কমিয়ে দেওয়া হবে। এ ছাড়া ন্যারো বডির উড়োজাহাজ ব্যবহার করে যেসব এয়ারলাইনস ফ্লাইট পরিচালনা করছে, তাদের ক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া হয় আসন সীমা। অর্থাৎ ২১০ আসনের ন্যারো বডির উড়োজাহাজ দিয়ে যেসব এয়ারলাইনস ফ্লাইট পরিচালনা করছে, তাদের প্রতি ফ্লাইটে ২০টি করে আসন ফাঁকা রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এতেও যদি লাগেজ লেফট বিহাইন্ড বন্ধ না হয় সে ক্ষেত্রে লাগেজ প্রতি ক্ষতিপূরণ এবং এয়ারলাইনসকে আর্থিকভাবে জরিমানা করার বিষয়টিও উল্লেখ করে বেবিচক।

 

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.