সেন্ট মার্টিন নিয়ে বক্তব্য ভিত্তিহীন: মির্জা ফখরুল

‘বিএনপি সেন্টমার্টিন দ্বীপ বা বাংলাদেশকে বিদেশিদের কাছে বন্ধক দিয়ে ক্ষমতা আসতে চায়’—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যকে ‘সর্বৈব মিথ্যা-বানোয়াট-ভিত্তিহীন’ বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘এটা (প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য) সম্পূর্ণভাবে বানোয়াট, ভিত্তিহীন, সর্বৈব মিথ্যা কথা। এই কথাগুলো বলে উনি (শেখ হাসিনা) কিছু সুবিধা পেতে চান। সেই সুবিধা যদি উল্টো হয়… এটা উনি বুঝেন না।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

এর আগে, বুধবার সুইজারল্যান্ড সফর নিয়ে গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এখনও যদি বলি যে না, ওই সেন্টমার্টিন দ্বীপ বা আমাদের দেশ কাউকে লিজ দেবো, তাহলে আমার ক্ষমতায় থাকার কোনও অসুবিধা নাই, আমি জানি সেটা। কিন্তু আমার দ্বারা সেটা হবে না।”

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেন, ২০০১ সালে বিএনপি ‘গ্যাস বিক্রি করার’ মুচলেকা দিয়েই ক্ষমতায় এসেছিল। এখন তারা দেশ বিক্রি করবে, নাকি সেন্টমার্টিন দ্বীপ বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়? আমি তো এটুকু বলতে পারি যে আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের কন্যা। আমার হাত থেকে এ দেশের কোনও সম্পদ কারও কাছে বিক্রি করে আমি ক্ষমতায় আসতে চাই না। ওই গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিলে আমিও ক্ষমতায় থাকতে পারতাম।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে সামনে রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘উনি (শেখ হাসিনা) কি এসব কথা বলেছেন ওনার অফিসিয়াল পজিশন এজ প্রাইম মিনিস্টার অর এজ প্রেসিডেন্ট অব আওয়ামী লীগ হিসেবে। প্রাইম মিনিস্টার হয়ে এই বক্তব্য দিয়েছেন… তাই না। এখন আমি তাকেই (প্রধানমন্ত্রী) জিজ্ঞাসা করতে চাই, ওনারা যে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট করেছেন সেই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বা যেকোনও নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে— যখন রং ইনফরমেশন দেওয়া হয়, মিথ্যা কথা বলা হয়—তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট হয় না, মামলা আসে না।”

ফখরুল বলেন, ‘এখন কি এটা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মামলায় পড়বে কিনা যে, উনি বিএনপির বিরুদ্ধে এই অভিযোগটা এনেছেন… পড়ে কিনা? মিথ্যা অভিযোগ, সর্বৈব মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ। তাহলে এটা (ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে) পড়ে। এটা আপনাদের (গণমাধ্যম) কাছে প্রশ্ন থাকলো।”

সরকারপ্রধানের এই বক্তব্য পলিটিক্যাল স্ট্যান্ড কিনা জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘এটা সম্পূর্ণ পলিটিক্যাল স্ট্যান্ড, …তারপরে উনি যেটা বলেছেন, আমি একবিন্দুও জীবন থাকতে দেবো না… এই কথাটা সম্পূর্ণ স্টান্ট। উনি যখন হেরে গেলেন ২০০১ সালের নির্বাচনে তখনও উনি একই কথা বলেছেন।”

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘বিএনপি একটা দল যে নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, স্বাধীনতা রক্ষায় সবসময় ত্যাগ স্বীকার করে এসেছে। এই দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন, লড়াই করেছেন। পরবর্তী সময়ে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, তিনি যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে, তখনও তিনি পুরোপুরি এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কাজ করেছেন। এখনও আজ পর্যন্ত কখনও কেউ বলে নাই যে বিএনপি দেশ বিক্রি করেছে বা দেশের কোনও জিনিস দিয়ে দিয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন খোকন, আবদুস সাত্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.