ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে এবারও প্রবাসীরা দেশে থাকা স্বজনদের জন্য বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে। মে মাসে রিজার্ভ কমে আসা নিয়ে যে নেতিবাচক তথ্য ছড়ানো হচ্ছিল, সেটা ভুল প্রমাণ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩১৮ মিলিয়ন ডলার বেড়ে ১৯ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ এক সপ্তাহে রিজার্ভ বেড়েছে ৩০০ মিলিয়ন ডলার।
এর আগে মে মাসে ২২৫ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে, যা গত ৪৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং এ যাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়। এর আগে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২০ সালের জুলাই মাসে। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৬০ কোটি ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে ২১০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার, মার্চে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ডলার এবং এপ্রিলে আসে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ মার্কিন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী গত ১২ জুন রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভের এই বৃদ্ধি আগামী সপ্তাহগুলোতেও অব্যাহত থাকতে পারে। কারণ চলতি মাসের শেষের আগে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার পাবে।
এদিকে, আইএমএফ জুনের শেষ সপ্তাহে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তিতে ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার ছাড় করতে পারে। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক বাজেট সহায়তা হিসেবে ৫০০ মিলিয়ন ডলার দিতে যাচ্ছে। এতে রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ঈদের আগে ১৪ দিনে তথা প্রবাসীরা জুন মাসের প্রথম ১৪ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৬৪ কোটি ৬৭ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন, যা দেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১১৮ টাকা ধরে) ১৯ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। সে হিসাবে ঈদের সময় দৈনিক রেমিট্যান্স এসেছে ৯৯১ কোটি টাকার বেশি।
আলোচ্য সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৩৯ কোটি ৪০ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৪ কোটি মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১২০ কোটি ৮১ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।