শনিবার যেকোনো মূল্যে সমাবেশ করার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, “যেকোনো ধরনের ঝুঁকি নিয়ে এ প্রতিবাদ সমাবেশের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত আছি।”
আজ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনার প্রেক্ষিতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জিএম কাদের বলেন, “আপনারা যে যেখানে আছেন বেরিয়ে পড়ুন, ভয় করবেন না। কত লোক মারতে চায় মারবে। আমরা দেখতে চাই কত লোক মারতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “গতকাল একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। ছাত্র-জনতার নামে কিছু মানুষ এসে হামলার চেষ্টা করে। কর্মীরা তাদের প্রতিহত করে। পরে রাজু ভাস্কর্য থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম করে অগ্নিসংযোগ করা হয়। তারা নাগরিক কমিটির সক্রিয় সদস্য বলে জানা গেছে।”
‘সমাবেশ ও সংগঠন করা সাংবিধানিক অধিকার’ উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, “জাপা একটি নিবন্ধিত দল, আমরা সংগঠন করার অধিকারপ্রাপ্ত। কিছু শর্ত রয়েছে, আমরা সমাবেশের অনুমতি চাইলে ডিএমপি কমিশনার অনুমতি দিয়েছে। জাপা কখনো সন্ত্রাস করে না। আমরা সবসময় শান্তির পক্ষে, আমরা কখনো টেন্ডারবাজি দখলবাজি করিনি।”
তিনি বলেন, “একটি গোষ্ঠী আমাদের আওয়ামী লীগের দোসর বলে প্রচার চালানোর চেষ্টা করছে। এই বক্তব্যের কোনো জাস্টিফিকেশান নেই। এ কারণে আমরা গুরুত্ব দিইনি। এখন বড়সড়োভাবে এই প্রপাগাণ্ড চালানো হচ্ছে।”
জিএম কাদের অভিযোগ করে বলেন, “২০২৪ সালে জাতীয় পার্টিকে (জাপা) শেখ হাসিনা সরকার ব্ল্যাকমেইল করে নির্বাচনে এনেছিল।”
তিনি বলেন, “আমাদেরকে বলা হয় আওয়ামী লীগের দোসর। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোট করে অংশ নিয়েছিলাম। সেই শেখ হাসিনার সরকারে আমি মন্ত্রী ছিলাম। তাই বলে আমরা শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ ও অন্যায়ের ভাগিদার হব কেন? সেই সরকারের বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী থাকাকালে হজযাত্রীদের খারাপ বিমানে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তার প্রতিবাদে আমি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলাম। তখন এ নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই তদন্ত প্রতিবেদনে আমি যে সঠিক ছিলাম তা উঠে এসেছিল। যার কারণে আমাকে পদত্যাগ করতে দেয়নি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা “
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, শেরিফা কাদের, আলমগীর শিকদার লোটন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক ও জনতা’ ব্যানারে একদল লোক একটি মিছিল নিয়ে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যায়। এ সময় সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে আগুন দেওয়া হয় জাপার কার্যালয়ে। পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ জাতীয় পার্টিকে ‘পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন’ করার হুঁশিয়ারি দেন।