বেসরকারিভাবে হজের সর্বনিম্ন খরচ ৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ টাকা

hajj20170130144633চলতি বছর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাওয়ার সর্বনিম্ন খরচ (কোরবানি ছাড়া) নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ টাকা। সরকার ঘোষিত দ্বিতীয় প্যাকেজের সমমূল্যের এই বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গত বছরের চেয়ে খরচ বেড়েছে ১৪ হাজার ৪৫২ টাকা। বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনের এক হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি এজেন্সিগুলোর পক্ষ থেকে এ প্যাকেজ ঘোষণা করেন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি ইব্রাহিম বাহার।

এ সময় হাবের মহাসচিব শেখ আবদুল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সমতা তৈরি হয়নি। কয়েক দফা সময় পিছিয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এক মাস আগে সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধন শুরু করে মন্ত্রণালয় অসম আচরণ করেছে তাদের প্রতি। হাব মহাসচিব বলেন, ৯৮ শতাংশ হাজী পাঠাই আমরা বেসরকারিভাবে। অথচ বেসরকারি হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন শুরু না হওয়ায় আজকে হাজী সাহেবদের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হচ্ছে। এ ব্যর্থতার জন্য সম্পূর্ণ মন্ত্রণালয় দায়ী বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

লিখিত বক্তব্যে হাব সভাপতি ইব্রাহিম বাহার বলেন, এ বছর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের সর্বনিম্ন মূল্য জনপ্রতি ৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ টাকা ধরা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেককে কোরবানির খরচ বাবদ ৫০০ সৌদি রিয়াল (১০ হাজার ৭৫০ টাকা) এবং ব্যক্তিগত অন্যান্য খরচের জন্য ৫০০ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ সৌদি রিয়াল সঙ্গে নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এর আগে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এবার সর্বনিম্ন ১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩৭ টাকা মৌলিক খরচ নির্ধারণ করে দেয় সরকার। এর সঙ্গে সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া, খাওয়া-দাওয়াসহ অন্যান্য খরচ যোগ করে ন্যূনতম এ ব্যয় ধরা হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এবার হজে যাওয়ার মৌলিক খরচ বেড়েছে ১ হাজার ৯৬ টাকা। গত বছর এ খরচ ছিল ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৪১ টাকা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্যাকেজ-১ এর আওতায় হজে যেতে এবার ৩ লাখ ৮১ হাজার ৫০৮ টাকা এবং প্যাকেজ-২ এর আওতায় ৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ টাকা খরচ হবে। হাব ঘোষিত সর্বনিম্ন খরচের বাইরে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার আওতায় একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করবে বেসরকারি এজেন্সিগুলো।

হাব সভাপতি বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এজেন্সিগুলো হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করবে; তবে হজ প্যাকেজে ঘোষিত টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ করা সাপেক্ষে পিলগ্রিম আইডি প্রদান করা হবে। যারা নির্ধারিত সময় ৩০ মার্চের মধ্যে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হবেন, তারা পিলগ্রিম আইটি পাবেন না এবং এ বছর হজে যেতে পারবেন না। তবে পরবর্তী এক বছর তাদের প্রাক-নিবন্ধন বলবৎ থাকবে।
কোনো দালাল-ফড়িয়া বা মধ্যস্বত্বভোগীর কাছে হজের টাকা জমা না দেয়া এবং সর্বনিম্ন প্যাকেজ মূল্যের কমে কারও সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ না হতে হজযাত্রীদের প্রতি অনুরোধ করেন হাব সভাপতি।

প্যাকেজ ঘোষণার পাশাপাশি সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থার লক্ষ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে ৭ দফা দাবি পেশ করে হাব। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী থার্ড ক্যারিয়ার ওপেন করা, দ্রুত ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছে এজেন্সির সব পাওনা ফেরত দেয়া, প্রত্যেক এজেন্সিকে একটি এবং ২০০ জনের বেশি হজযাত্রীর জন্য দুইটি বারকোড দেয়া, ক্যাটারিং সার্ভিস বাধ্যতামূলক না করা এবং সিলেট-চট্টগ্রামে সমান ভাড়া নিশ্চিত করে আরও বেশি সরাসরি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা।

সৌদি আরবের সঙ্গে এ বছরের হজ চুক্তি অনুযায়ী সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার ও বেসরাকরি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১৭ হাজার ১৯৮ বাংলাদেশী হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এবারের হজ আগামী ১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে হাব সহ-সভাপতি ফরিদ আহমেদ মজুমদার, অর্থ সম্পাদক ফজলুল হক মামুন, মোজাম্মেল হোসেন কামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.