কলকাতা-ইয়াঙ্গুন-ফুকেট সমুদ্র রুটে বাংলাদেশ

imagesএবার কলকাতা-ইয়াঙ্গুন-ফুকেট সমুদ্র রুটে আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী জাহাজ সার্ভিসে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। ৬৭ জন বিদেশি পর্যটক নিয়ে ‘সিলভার ডিসকভারার’ জাহাজটি আগামী ১ মার্চ দেশে পৌঁছবে। ৩ মার্চ পর্যন্ত তিন দিন সুন্দরবন ও মহেশখালীর ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, নদী ও পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করবে পর্যটকরা।

এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ৯১ জন বিদেশি পর্যটক নিয়ে প্রথমবার বাংলাদেশ ভ্রমণে আসে বিলাসবহুল যাত্রীবাহী জাহাজটি। তখন শ্রীলঙ্কার কলম্বো থেকে রওনা দিয়ে কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপ, হিরণ পয়েন্ট ও সুন্দরবনের হারবারিয়া ভ্রমণ করে কলকাতায় গিয়ে যাত্রা শেষ করে। এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী সমুদ্র রুটে যুক্ত হয়েছিল বাংলাদেশ।

জানতে চাইলে ‘সিলভার ডিসকভারার’ জাহাজটির দেশীয় ট্যুরিজম পার্টনার ‘জার্নি প্লাসের’ প্রধান নির্বাহী তৌফিক রহমান বলেন, ‘৬৭ জন বিদেশি পর্যটক নিয়ে জাহাজটি এবার কলকাতা থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি রওনা দিয়ে ১ মার্চ মোংলা বন্দরে পৌঁছবে। সেখান থেকে ১ মার্চ ছেরাপুটিয়া, হারবারিয়া ও ২ মার্চ কোকিলমারী ভ্রমণ শেষে ৩ মার্চ মহেশখালীতে পৌঁছবে। ৬ মার্চ ইয়াঙ্গুন, ১২ মার্চ পর্যন্ত মিয়ানমারের বিভিন্ন স্থান ভ্রমণ করে ১৩ মার্চ থাইল্যান্ডের ফুকেটে গন্তব্য শেষ করবেন। ’

তৌফিক রহমান আরো বলেন, প্রথম জাহাজটি নিরাপদে ভ্রমণ শেষ করতে পারায় বাংলাদেশ সক্ষমতার প্রমাণ দিল। দ্বিতীয় জাহাজটির পর আপাতত নতুন করে জাহাজের শিডিউল পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, দ্বিতীয় জাহাজে যাত্রীদের বেশির ভাগ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। এরপর রয়েছে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপের পর্যটক। ১৪ দিনের এই ভ্রমণে যাত্রীদের ব্যয় করতে হয়েছে সাড়ে ১০ হাজার ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় আট লাখ ৩৬ হাজার টাকা। এর আগে প্রথম জাহাজে ৯১ জন পর্যটকের কাছ থেকে প্রতিজনের ভিসা ফি বাবদ ৫১ ডলার হিসেবে বাংলাদেশ মোট রাজস্ব পেয়েছিল পৌনে চার লাখ টাকা।

শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক রফিকুল আনোয়ার বাবু বলেন, ‘বাংলাদেশ কত টাকা রাজস্ব পেল সেটি বড় কথা নয়, এই বিদেশি পর্যটকদের ১০ শতাংশ যদি বাংলাদেশকে দেখে খুশি হয় তাহলে আমাদের সার্থকতা। ’ এবারও মোংলা বন্দরের মাধ্যমে ‘অন অ্যারাইভাল ভিসা’ নিয়ে বিদেশি পর্যটকরা সুন্দরবন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। আর মহেশখালী ভ্রমণ শেষে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরের মাধ্যমে ইমিগ্রেশন সিল নিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করবে।

বিদেশি পর্যটকরা কক্সবাজার ভ্রমণ করায় বিশ্ব পর্যটনের নতুন দুয়ার উন্মুক্ত হয়েছে মন্তব্য করে কক্সবাজারের বাসিন্দা অধ্যাপক মোস্তফা জামান খারেছ বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য বিশাল গর্বের বিষয়। শুধু মহেশখালী কেন, সেন্ট মার্টিনস, সোনাদিয়া ও কুতুবদিয়া, একই সঙ্গে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার ঘুরে দেখানো উচিত এই বিদেশি পর্যটকদের। ’

জানা গেছে, সমুদ্রপথে বিলাসবহুল ‘সিলভার সি’ গ্রুপ ৪৭টি জাহাজ দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পর্যটক পরিবহন করছে। ১২০ জন যাত্রী ধারণক্ষমতার ‘সিলভার ডিসকভারার’ জাহাজে ৯৬ জন ক্রু রয়েছে। জাহাজে যাত্রীদের আন্তর্জাতিক মানের বিলাসবহুল স্যুট ও কেবিনে থাকা, জাহাজের রেস্টুরেন্টে খাওয়া, একই সঙ্গে সুইমিং পুল, বারবিকিউসহ সব সুবিধা রয়েছে।

সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ভারতের বিভিন্ন যাত্রীবাহী সমুদ্রপথে যুক্ত হতে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.