উন্নত দেশ গড়তে সবার সহযোগিতা চাইলেন শেখ হাসিনা।
উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের মহান নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছিলেন, বাংলাদেশ হবে- একটা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ। বিশ্বসভায় আমরা মাথা উঁচু করে চলব। সরকারের গৃহীত সব পদক্ষেপ, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে আমরা সে পথে অনেকদূর এগিয়ে যাব।
বুধবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে রাজনৈতিক নেতা, সামরিক-বেসামরিক ও বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, স্কাউটস, শিক্ষক, সাংবাদিক, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে এলে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি সবার সমর্থন পেয়েছিলাম বলেই জয়লাভ করেছি। আর এ জয় পেয়েছি বলেই দেশকে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব। যে কাজগুলো করেছি, তার অনেকগুলো এখনও অসমাপ্ত রয়ে গেছে। সেগুলো সম্পন্ন করা, দেশকে আরও উন্নত সমৃদ্ধশালী করাই হবে আমাদের কাজ।
আগামীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ একটা অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ হবে। এখানে কোনো যুদ্ধাপরাধী, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতিবাজের স্থান হবে না। তিনি বলেন, জনগণ আবারও বিজয়ী করে যে দায়িত্বটা দিয়েছে, তা পালন করতে সবার সহযোগিতা কামনা করি, যেন দেশটাকে আমরা সুন্দরভাবে গড়তে পারি। ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে পারি।
দেশবাসী এবং উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের এই সমর্থনের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের সর্বান্তকরণ সমর্থনের ফলেই আমরা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।
এদিকে বাংলাদেশ ফরেন সর্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএসএ) পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়- এ সময় পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, বিএফএসএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুদ মাহমুদ খন্দকার, সহ-সভাপতি নাহিদা সোবহান, সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ কাস্তগীর, চিফ অব প্রটোকল একেএম শহিদুল করিম, মহাপরিচালক (প্রশাসন) সালাউদ্দিন নোমান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে গণভবনে যান ব্যবসায়ী, ব্যাংকারসহ বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থার প্রতিনিধিরা।
এ সময় তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আল্লাহর রহমতে আমার মনে হয়েছে এবারের নির্বাচনটা সেই সত্তর সালের যে নির্বাচন বা ’৭৩ সালের যে নির্বাচন ঠিক সেই রকমই নির্বাচন হয়েছে। ’৭০ সালে কিন্তু একটা ২০ দলীয় ঐক্যজোট ছিল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। এখনকার অনেকে জানেই না, কারণ অনেকের জন্মই হয়নি। তখনও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ২০ দলীয় একটা ঐক্য ছিল। তারা মাত্র দুইটা সিট পেয়েছে, বাকি সব সিট জাতির পিতা পেয়েছিলেন নৌকায়। উনি (বঙ্গবন্ধু) জানতেন এটা পাবেন। গোটা পাকিস্তানে কিন্তু আওয়ামী লীগ মেজরিটি পেয়েছিল। যাই হোক তারপর আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গিয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এবার মানুষের মধ্যে ভোট দেয়ার যে আকাক্সক্ষা ছিল, একজন বলছে ভোট দিয়েছে, বলে কাকে দিলা, বলে নৌকায়। প্রার্থী কে ছিল, বলে সে তো জানি না। আমি নৌকায় ভোট দিয়েছি। এটা দেখেছিলাম সত্তরের নির্বাচনে ক্যাম্পেইন করতে গিয়ে। কাকে ভোট দেবে সেটা না, যে শেখ মুজিবের নাও (নৌকা), শেখের নৌকাতে ভোট দিবে। নৌকা ছাড়া কিছু বোঝে না, শেখ মুজিব ছাড়া কিছু বোঝে না।
ব্যবসায়ীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের সমর্থন আমাদের ভোট পেতে সহযোগিতা করেছে। ঐক্যফ্রন্টের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তাদের আচার-আচরণটা ছিল খুব পিকিউলিয়ার, এটা দুঃখজনক। কারণ তারা যেভাবে নমিনেশন দিয়েছে, মানে এটা ঠিক ইলেকশন করার জন্য না।’
ঐক্যফ্রন্ট মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে এভাবে হেরেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাহলে আপনারা চিন্তা করুন এই যে নমিনেশন যাচ্ছে বারবার কিসের বিনিময়ে যাচ্ছে। এই ঘটনা যারা ঘটায় তারা ভোটইবা পাবে কি? আর নির্বাচনইবা করবে কি? এটা তো রীতিমতো ব্যবসাবাণিজ্য হয়ে গেছে। শেখ হাসিনা বলেন, একটা অপজিশন শক্তিশালী দরকার হয় গণতন্ত্রের জন্য। কাজেই আমরা এজন্য চাচ্ছিলাম যে অপজিশনটা অন্তত ভালোভাবে হোক। এভাবে নমিনেশন বিক্রি করলে তো অপজিশন হওয়ার সুযোগ কমই থাকে।
জাবি ভিসির শুভেচ্ছা : জাবি প্রতিনিধি জানান, শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি। বুধবার সকালে দেশের প্রথম নারী ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের নেতৃত্ব ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদের’ একটি প্রতিনিধি দল গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
জাবি ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে মহাজোট সরকারের পদক্ষেপগুলোর প্রশংসা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বশির আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক মো. ফরহাদ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান এবং সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শেখ আদনান ফাহাদ।