অবশেষে একনেকে পাশ হল বাগের হাটে খানজাহান আলী বিমানবন্দরের নির্মাণ । এ বিষয়ে একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটির (একনেক)। অনুমোদন পেয়েছে চেট্ট্রগামের মহিপালে ফ্লাইওভার নির্মাণে পৃথক প্রকল্প। একই হাতে নেয়া হয়েছে কূটনৈতিক জোনের উন্নয়নে নেয়া হয়েছে ২০০ কোটি টাকার অপর একটি প্রকল্প। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এ সব প্রকল্পসহ সর্বমোট ১০ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।
রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা। বৈঠক পরবর্তী সংবাদ ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান মঙ্গলবার মোট ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে আটটি প্রকল্প নতুন। এ সব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ১ হাজার ৯১০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রকল্প ব্যায়ের ১ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা আসবে সরকারের তহবিল থেকে। নিজস্ব তহবিল থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো ব্যয় করবে ১১৪ কোটি টাকা।
পরিকল্পনামন্ত্রী জনাান, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বাড়াতে বাগেরহাটের রামপালে খান জাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে। এর ফলে বৃহত্তর খুলনায় ব্যবসা বাণিজ্যের সম্প্রসারণ, পর্যটন শিল্পের প্রসার এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত হবে। ২০১৮ সালের জুন নাগাদ এ নির্মাণ কাজ শেষ হবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কতৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ৪৯০ কোটি টাকা। বাকি ৫৪ কোটি টাকা বেসামরিক বিমান চলাচল কতৃপক্ষ তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে দেবে।
মন্ত্রী বলেন, বাগেরহাটে মংলা বন্দর, ইপিজেড, চিংড়ি শিল্প ও রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ঘিরে ব্যবসা বাণিজ্যের সম্প্রসারণ হবে।
প্রস্তাবিত বিমানবন্দরের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে খুলনা শহর ও মংলা সমুদ্রবন্দর। এখানে বিমান বন্দর হলে সুন্দরবন, ষাট গম্বুজ মসজিদ, খান জাহান আলীর মাজারকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের প্রসার বাড়বে। এছাড়া উপকুলীয় অঞ্চলে দ্রুত ত্রাণকার্যও এ বিমান বন্দরের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যাবে।
গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকার রাস্তা, নর্দমা এবং ফুটপাত নির্মাণ ও পুননির্মাণে সভায় কন্সট্রাকসন এন্ড ইমপ্র“ভমেন্ট অব রোডস, ড্রেইনস এন্ড ফুটপাথস অব গুলশান, বনানী এন্ড বারিধারা ডিপ্লোমেটিক এরিয়াস শীর্ষক প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বনানী, গুলশান ও বাড়িধারা এলাকার অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে দেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরতে এ প্রকল্প নেয়া হয়েছে।
২০০ কোটি টাকা ব্যায়ে প্রকল্পের আওতায় ৪০ কিলোমিটার নতুন রাস্তা নির্মাণ, ৫৬ কিলোমিটার ফুটপাতের উন্নয়ন, ২৫ কিলোমিটার পাইপ ড্রেন নির্মান ও ৫৫ কিলোমিটার খোলা ড্রেন নির্মাণ করা হবে।
সভায় সড়ক খাতে দুইটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মহিপাল ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফেনী জেলার মহিপালে ৬ লেন বিশিষ্ট এ ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। ১৫৮ কোটি টাকায় ২০১৮ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। পৃথক প্রকল্পের আওতায় সোনাগাজী-ওলামাবাজার-চরদরবেশপুর-কোম্পানীগঞ্জ সড়কে ছোট ফেনী নদীর উপর ৪৭৮ মিটার পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে ৭৩ কোটি টাকা।
সভায় ৩৮০ কোটি টাকা ব্যয় ধরে পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তিন পার্বত্য জেলা- রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। এ তিনটি পার্বত্য জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নই প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য।
সভায় অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্যচাষ প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণ (২য় পর্যায়), টিকা উৎপাদন প্রযুক্তি আধুনিকায়ন ও গবেষণাগার সম্প্রসারণ (২য় সংশোধিত), মহিষ উন্নয়ন (২য় সংশোধিত), ছয়টি জেলা পাবলিক লাইব্রেরি উন্নয়ন এবং ১৫ জেলা শিল্পকলা একাডেমির নবায়ন, সংস্কার ও মেরামত প্রকল্প।