সংযুক্ত আরব আমিরাত : মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় দু’চোখই হারিয়েছেন আব্দুছ ছালাম। থমকে গেছে জীবনের চাকা। এখন শুধুই অপেক্ষা ঘরে ফেরার। প্রিয় দেশের মাটিতে ফিরে আসার। কিন্তু কে ফেরাবে তাকে। যে দেশের সমৃদ্ধির জন্য বিদেশ যাত্রা। এতকষ্ট! সেই বাংলাদেশ দূতাবাস পাঁচ মাসেও খবর নেয়নি আব্দুছ ছালামের।
ছালাম এখন অন্ধ। চিরতরে নিভে গেছে দু’চোখের আলো।
অনেক স্বপ্ন নিয়ে দেশের সব মায়া ছেড়ে স্বপ্নের দেশ আরব আমিরাতে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি।
বেছে নিয়েছিলেন ড্রাইভিং পেশা। সেই পেশাই কাল হলো তার। সেই সব স্বপ্ন নিভে গেলো নিমিষেই। ট্যাক্সির চাকার সঙ্গে থমকে গেলো জীবনও।
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার দক্ষিণ চরদুয়ানি গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে আব্দুছ ছালাম। দুবাইতে চাকরি নিয়েছিলেন ‘দুবাই ট্যাক্সি’ নামক কোম্পানিতে। বেশ ভালোই যাচ্ছিল দিন। কিন্তু সেই সুখ আর বেশি দিন সইলো না। ১ জানুয়ারি নেমে এলো অন্ধকার। দুবাইয়ের রাস্তায় ট্যাক্সি চালাচ্ছিলেন তিনি। পেছন থেকে
‘ট্রেল্লা’ এসে ধাক্কা দেয়।ছিটকে রাস্তার বাইরে পরে যায় ছালামের ট্যাক্সি। পথচারিদের ফোন পেয়ে আব্দুছ ছালামকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।
‘দুবাই রাশেদ’ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। চিকিৎসকরা জানান, ছালামের ডান চোখ সম্ভবত দুর্ঘটনাস্থলেই পরে গেছে, এখন বাম পাশের চোখটি ভালো করার চেষ্টা। কিন্তু সেই চেষ্টাও বিফলে গেছে। বাম পাশের চোখটিও রক্ষা করতে পারেননি চিকিৎসকরা।
ছালামের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করেছে তার প্রতিষ্ঠান ‘দুবাই ট্যাক্সি’। ওই দুর্ঘটনার পর কেটে গেছে পাঁচ পাঁচটি মাস। চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছেন ছালাম।
এখন দেশে ফেরার অপেক্ষা। ফেরার প্রহর গুনছেন স্বজনদের কাছে। পাথরঘাটার সেই চরদুয়ানি গ্রামে। সবুজ আলোর স্পর্শে।
কিন্তু সেই দেশে ফেরার সহযোগিতায় এতদিনেও আব্দুছ ছালামের কোনো খোঁজ নেয়নি সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।
আব্দুছ ছালামের চাচা মো. দুলাল জানান, দুবাই কনস্যুলেটের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলেছেন তিনি। কিন্তু এখনো কোনো খবর আসেনি।