দেশে উড়োজাহাজ পরিচালনা নিরাপদ করতে কেনা হবে ইক্যুপমেন্ট

দেশে উড়োজাহাজ পরিচালনা নিরাপদ করতে কেনা হবে ইক্যুপমেন্ট।

দেশের বিমান বন্দরগুলোতে এয়ার ট্রাফিকের পরিমাণ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বিমান বন্দরগুলোতে বিদ্যমান ইক্যুপমেন্টগুলোর অধিকাংশ পুরনো, যা প্রায়ই ঠিকঠাক কাজ করছে না। আর আকাশ পথের যাত্রীদের আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটে নিরাপদ সেবা দিতে বন্ধ পরিকর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
সে লক্ষ্যে ‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর সিকিউরিটি ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় দেশের সব বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ পরিচালনা নিরাপদ করতে কেনা হবে প্রয়োজনীয় আধুনিক ইক্যুপমেন্ট।

শুধু তাই নয়, প্রকল্পের আওতায় দেশে কার্যরত তিনটি আন্তর্জাতিক ও ছয়টি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরের নিরাপত্তা আরো জোরদার করছে সরকার। আর উড়োজাহাজ পরিচালনা ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ হলো কমিউনিকেশন ও নেভিগেশন সার্ভেইল্যান্স (সিএনএস) ব্যবস্থা।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের সব বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করতে ‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর সিকিউরিটি ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মোট ব্যয় ৬০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যশোর বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও সিভিল এভিয়েশন ট্রেনিং সেন্টারে বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রকল্পটির অন্যতম উদ্দেশ্য হলো সিকিউরিটি ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে কার্যকরী এয়ার ট্রাফিক সেবা বৃদ্ধিসহ বাংলাদেশে নিরাপদ বিমান পরিবহন পরিচালনা করা, সিভিল এভিয়েশন ট্রেনিং সেন্টারে (সিএটিসি) এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের (এটিসি) জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া, শাহজালাল বিমানবন্দরে এয়ারক্রাফট দুর্ঘটনারোধে বিমানবন্দরে উদ্ধারকাজ ও অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং বাংলাদেশে উড়োজাহাজখাতের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা।

মন্ত্রণালয় সূত্র আরো জানায়, আকাশ পথে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে উড়োজাহাজ চলাচলের লক্ষ্যে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব ফ্লাইট ইনফরমেশন রিজন (এফআইআর) কভারের সার্ভেইল্যান্স গভীর সমুদ্র পর্যন্ত বিস্তৃত করার জন্য শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে প্রকল্প এলাকা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। এছাড়া যশোর ও সৈয়দপুরে দু’টি কনভেনশনাল ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি ওমনি ডাইরেকশনাল রেডিও রেঞ্জ (সিভিওআর) রয়েছে যা ২৫ বছরের পুরনো। ফলে এখানে ইক্যুপমেন্ট ডপলার ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি অমনি রেঞ্জ (ডিভিওআর) প্রতিস্থাপন ও ডিএমই (ডিসটেন্স মেজারিং ইক্যুপমেন্ট) স্থাপনের জন্য প্রকল্প এলাকা নির্বাচন করা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এটিসি প্রতিস্থাপন করা হবে।

সূত্র জানায়, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রাইমারি সার্ভেইল্যান্স রাডার (পিএসআর) এবং সেকেন্ডারি সার্ভেইল্যান্স রাডার (এসএসআর) নেই। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসএসআর ৩০ বছরের পুরনো। এসব পুরনো ইক্যুপমেন্ট দিয়ে বাংলাদেশের সব এফআইআর (ফ্লাইট ইনফরমেশন রিজন) কাভার করা হচ্ছে। ফলে দ্রুত সময়ে এসব বিমানবন্দরে এএসআর ও পিএসআর প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে যশোর ও সৈয়দপুরে ২৫ বছরের পুরনো সিভিওআর ও ডিভিওআর প্রতিস্থাপন করা জরুরি। প্রকল্পের আওতায় এগুলো প্রতিস্থাপন করে বাংলাদেশের সব বিমানবন্দরের উড়োজাহাজ পরিচালনা নিরাপদ করা হবে।

এসব বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান (পরিকল্পনা) জাকিয়া আফরোজ বলেন, বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ও নিরাপদ উড়োজাহাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ইক্যুপমেন্ট ক্রয় করা হবে। এজন্য প্রায় ৬০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে জাপানের সহায়তা নেওয়া হবে। সবকিছুই চূড়ান্ত করে প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে প্রকল্পটি অল্প সময়েই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেব) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.