বাংলাদেশের জন্য ইলেক্ট্রনিক ভিসা পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে ভারত। এর মাধ্যমে অন-অ্যারাইভাল ভিসা সুবিধা পাবে বাংলাদেশি ভ্রমণকারীরা। অনলাইনে আবেদন করে ৪ দিনের মধ্যেই থাকবে দেশটি সফরের সুযোগ।
সূত্র জানিয়েছে, এই সুবিধা নিশ্চিত করার ঘোষণা আসবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরেই। ই-ট্যুরিস্ট ভিসা (ইটিভি) নামে এই ভিসা পদ্ধতি চালু হলে বাংলাদেশিদের ভারত সফর হবে নির্বিঘ্ন, সহজ এবং দ্রুততর।
নয়াদিলি্লর দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের জন্য ইটিভি চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে ভারত সরকার। জুনের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ সফরকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে ঘোষণাটি দেবেন নরেন্দ্র মোদি।
ভিসা পেতে দীর্ঘদিনের হয়রানি ও জটিল প্রক্রিয়া দূর করতেই অনলাইনে কিছু নির্দিষ্ট দেশের ভ্রমণকারীদের জন্য এই পদ্ধতি চালু করেছে ভারত সরকার। বাংলাদেশ তার অন্যতম বলেই জানায় সূত্রটি।
অনলাইন ভিসার এই প্রক্রিয়া ভারত আগেই শুরু করেছে। ২০১৪-এর নভেম্বরে ৪৫টি দেশের জন্য অনলাইন ভিসা চালু করে দেশটির সরকার। সর্বশেষ এতে যোগ দেয় চীন। এখন ৭৬টি দেশে এই সুবিধা চালু রয়েছে। এবার তালিকায় যুক্ত হচ্ছে অন্যতম প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার চলতি অর্থবছরের মধ্যে এই সংখ্যা ১৫০-এ উন্নীত করতে চায়।
ভারতের ই-ট্যুরিস্ট ভিসার ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের ইন্টারচেঞ্জ চার্জ ছাড়াই প্রত্যেকের জন্য ইটিভি ফি পড়বে ৬০ ডলারের মতো। ভারতে পেঁৗছানোর পর ৩০ দিন পর্যন্ত এই ভিসার মেয়াদ থাকবে। এক পঞ্জিকা বর্ষে সর্বোচ্চ দুইবার ভ্রমণ করা যাবে।
আরো জানা যায়, ভিসাধারীরা ভারতের বেঙ্গালুরু, কোচিন, দিলি্ল, গোয়া, হায়দ্রাবাদ, কলকাতা, মুম্বাই এবং ট্রিভানড্রাম_ এই ৯টি বিমানবন্দরের মাধ্যমে ভারতে ঢুকতে পারবেন।
ভারতের পেঁৗছানোর পর থেকে ৬ মাস পাসপোর্টের মেয়াদ আছে_ এমন ব্যক্তিদের এই ভিসা সুবিধা দেয়া হবে। এর আওতায় ভ্রমণকারীদের রিটার্ন টিকিট অথবা অনওয়ার্ড জার্নি টিকিট থাকতে হবে। সেই সঙ্গে ভারতে ব্যয় করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ সঙ্গে থাকতে হবে।
আবেদনের পর ৪-৩০ দিনের মধ্যে ভারতে যাওয়া যাবে।
বিশ্বের একক কোনো দেশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে ভারত সফরকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ২০১৪ সালে এর সংখ্যা ছিলো ৬ লাখ ৫০ হাজার, যারা বৈধ ভিসার মাধ্যমে ভারতে যায়।
ধারনা করা হচ্ছে, অনলাইন ভিসা চালু হলে এই সংখ্যা আরো বাড়বে।
যেসব বাংলাদেশিরা চিকিৎসা, ব্যবসা, ভ্রমণ কিংবা আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে ভারতে যেতে ইচ্ছুক তারাই ই-ভিসা পাবেন।
সূত্র জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে নতুন এই ভিসা পদ্ধতি বাংলাদেশিদের জন্য উপহারস্বরূপ। এ ছাড়া সফরে আরো কিছু ইতিবাচক ঘোষণাও আসবে মোদির কাছ থেকে। মোদির ৬-৭ জুনের ঢাকা সফরে স্থল, রেল এবং বন্দর কানেকটিভিটিসহ বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে।
আশা করা হচ্ছে, কলকাতা-ঢাকা-ত্রিপুরা এবং ঢাকা-শিলং- গৌহাটি বাস সার্ভিস চালু হতে পারে_ মোদি-হাসিনার হাত ধরে।