ড্রোন বাণিজ্যে মহাজন ইসরাইল

ড্রোন বাণিজ্যে মহাজন ইসরাইল।

বিশ্বজুড়ে নিরাপত্তাসহ সামরিক ও বেসামরিক উভয় ক্ষেত্রে ড্রোনের ব্যবহার বাড়ছে। সেইসঙ্গে বাড়ছে এর বাজার।

ড্রোনের ব্যাপক চাহিদা ও এর বিশাল বাজার দখলে রীতিমতো লড়াই করছে পরাশক্তিগুলো। এতদিন চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের দখলেই ছিল বাজার। কিন্তু পরাশক্তি এ দেশ দুটিকে টেক্কা দিয়ে ড্রোন বাণিজ্যের মহাজন হয়ে উঠছে ইসরাইল।

এক্ষেত্রে নিজেদের বহুদিনের সামরিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাচ্ছে দেশটি। বাণিজ্যের সঙ্গে সঙ্গে সামরিক ক্ষেত্রে এর ব্যাপক ব্যবহার করছে তারা। ড্রোন ব্যবহার করেই ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের টিয়ার গ্যাসের কৌটা নিক্ষেপ চলছে।

লেবাননের হিজবুল্লাহর ওপর নজরদারি এমনকি প্রতিবেশী সিরিয়াসহ অন্য দেশগুলোর ওপর নজরদারি এবং হামলার কাজেও ড্রোন ব্যবহার হচ্ছে।

এএফপি জানিয়েছে, ড্রোনের বিরাট শিল্প গড়ে তুলেছে ইসরাইল। প্রধানত দেশটির সাবেক সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের হাতে এ শিল্প গড়ে উঠেছে।

তাদের কেউ ড্রোন কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা, আবার কেউ ড্রোন প্রকৌশলী। ইসরাইলের কার্যকর প্রথম ড্রোনটি তৈরি হয়েছিল প্রায় ৪০ বছর আগে ১৯৭৮ সালে।

রিমোট নিয়ন্ত্রিত ও ক্যামেরাবিশিষ্ট এই ড্রোনটি তৎকালে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী মিসরের ওপর নজরদারিতে ব্যবহার করত ইসরাইলি সেনাবাহিনী।

১৯৭৮ সালে লেবানন যুদ্ধের সময় থেকে ড্রোনের ব্যবহার বাড়তে থাকে। যদিও তখন এর প্রযুক্তি ততটা উন্নত হয়নি। কিন্তু ৪০ বছর পরে এসে বিশ্ব ড্রোন বাণিজ্যের বড় সওদাগরে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের জমি দখল করে গড়ে ওঠা ছোট্ট দেশটি।

চারদিকে শত্রুবেষ্টিত ইসরাইল ড্রোন প্রযুক্তি নিয়ে প্রচুর গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায়। এটাই তাদের বিশ্বের ড্রোন ব্যবসায়ী হয়ে ওঠার প্রধান কারণ। এক্ষেত্রে চীন ও আমেরিকাকে টেক্কা দিচ্ছে। সামরিক ও বেসামরিক দুই ধরনের ড্রোনই তৈরি করছে তারা। তবে বর্তমানে সামরিক ও নজরদারি ড্রোনের চাহিদাই বেশি।

ইসরাইলের অন্যতম বড় সামরিক ড্রোন কোম্পানি ব্ল–বার্ড অ্যারো সিস্টেমস। প্রতিষ্ঠাতা ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সাবেক কমান্ডার রোনেন নাদির। কোম্পানি প্রতিষ্ঠার আগে ক্ষেপণাস্ত্র প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করতেন তিনি। বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ ড্রোন বিক্রি করে তার কেম্পানি।

এর মধ্যে রয়েছে ওয়ান্ডারবি ভিটোল। হেলিকপ্টারের মতো খাড়াভাবে উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে এগুলো। ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত এ মডেলের শতশত ড্রোন বিক্রি হয়েছে বলে জানান নাদির।

ইসরাইল কীভাবে আমেরিকাকে টেক্কা দিচ্ছে সে ব্যাপারে নাদির বলেন, আমেরিকার কোনো কোম্পানি যখন কোনো ড্রোন তৈরি করে এটা প্রথমে ইরাক বা আফগানিস্তানে ব্যবহার করা হয়। ব্যাপকভাবে উৎপাদনে যেতে অনেক বছর সময় লেগে যায়।

কিন্তু ইসরাইলে ড্রোন নির্মাণের সঙ্গে জড়িত প্রায় সবাই সেনাবাহিনীর সাবেক কমান্ডার কিংবা কর্মকর্তা। এখানে যারা প্রকৌশলী তারা আবার সেনাবাহিনীতেই কাজ করে।

ফলে ড্রোন তৈরিতে কম সময় লাগে এবং দ্রুতই বাজারে সরবরাহ করা যায়। এই মুহূর্তে চীন ইসরাইলের চেয়ে একটু এগিয়ে রয়েছে বলে মনে করা হয়। দেশটি সাধারণত কম দামের ও কম গুণগত মানের ড্রোন তৈরি করে এবং ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক নেই এমন দেশগুলোতে সেগুলো বিক্রি করে থাকে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.