অনলাইনে মূসক আদায়ে তিন নির্দেশনা

dd2a65a945ba29e1dd2fa748d46a25a8-3নতুন মূল্য সংযোজন কর বা মূসক আইন বাস্তবায়ন তথা অনলাইনে মূসক আদায়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) তিনটি নির্দেশনা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
নির্দেশনাগুলো হচ্ছে—ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এনবিআরের যোগাযোগ বৃদ্ধি, মত বিনিময় করে ব্যবসায়ীদের সচেতন করে তোলার দায়িত্ব পালন এবং যথাযথ হিসাব সংরক্ষণের স্বার্থে ব্যবসায়ীদের ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার (ইসিআর) মেশিন ব্যবহারে অভ্যস্ত করে তোলার দায়িত্ব পালন।
রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত মূসক অনলাইন প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা শেষে অর্থমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত মূসক অনলাইন প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় গতকাল রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতসহ অন্যরা l প্রথম আলোএনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তিন নির্দেশনার কথা জানান।
পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী। এনবিআর চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতি নিয়ে আলোচনার সময় অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনূসুর রহমান, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দিন, হিসাব মহানিয়ন্ত্রক আবুল কাশেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রকল্পের অগ্রগতির চিত্র পরে জানানো হবে আশ্বাস দিয়ে সাংবাদিকদের পর্যালোচনা সভায় থাকতে দেওয়া হয়নি। সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীও কোনো কথা বলেননি।
এনবিআর চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, দেশের মূসক আদায় কার্যক্রম সনাতনী পদ্ধতির বদলে ডিজিটাল যুগে পা রাখছে, যা শুরু হচ্ছে আগামী ১ জুলাই। এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের
হয়রানি যেমন কমবে, কমবে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর মূসক ফাঁকির প্রবণতাও। এতে মূসক আদায় বাড়বে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।বৈঠক সূত্র জানায়, অর্থমন্ত্রীর কাছে উপস্থিত কয়েকজন কর্মকর্তা জানতে চান, নতুন মূসক আইন বাস্তবায়নে কিছু ব্যবসায়ী বিরোধিতা করছেন। আইন কার্যকরে রাজনৈতিক কোনো বাধা আছে কি না। জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, কিছু বিরোধিতা হবেই। তবে ১ জুলাই থেকেই নতুন আইন কার্যকর হবে। এটা পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই।সূত্রমতে, সৎ ব্যবসায়ীরা নতুন আইনের বিরোধিতা করবেন না বলে সভায় নিজের বিশ্বাসের কথা জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ইসিআর মেশিন ব্যবহারে অভ্যস্ত হলে অনলাইনে মূসক আদায় কঠিন হবে না। আর ১৫ শতাংশ মূসক হারেরও কোনো পরিবর্তন হবে না।
অর্থমন্ত্রী অনলাইন পদ্ধতিতে মূসক আদায়ের পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করার বিষয়েও তাগিদ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে, পর্যালোচনা সভা থেকে মোট সাতটি বিষয় উঠে এসেছে বলে সাংবাদিকদের জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। এগুলো হচ্ছে করদাতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি, যথাযথ হিসাব সংরক্ষণ, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, সাইবার নিরাপত্তা বজায় রাখায় সতকর্তা, একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত থাকা (ইন্টিগ্রেশন), স্বাধীন যাচাই-বাছাইকরণ (ইনডিপেনডেন্ট ভেরিফিকেশন) এবং তথ্যের অবাধ প্রবাহ।
সভা শেষে অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, আয় ও ব্যয়ের মাঝখানে বিনিয়োগযোগ্য তহবিল না থাকলে দেশ এগোতে পারবে না। এনবিআর যে আয়টা করে, তার সিংহভাগই আসে

মূসক থেকে। সুতরাং মূসক আদায়ে এনবিআরকে তৎপর ও মনোযোগী হতে হবে।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনূসুর রহমান বলেন, ‘বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে আমাদের ডিজিটাইজেশনের পথে যেতেই হবে। পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি নিরাপত্তার ব্যাপারেও অধিকতর জোর দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি নিরাপত্তায় প্রায় ক্ষেত্রেই বিদেশি বন্ধুরা নিয়োজিত। তাঁদের সহযোগিতা অস্বীকার করতে পারি না, কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে তথ্যপ্রযুক্তি নিরাপত্তায় দেশীয় সক্ষমতা দরকার।’

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.