ইউরোপে একের পর এক হামলার কারণে আবাসনের (রেসিডেন্ট) উপর গুরুত্ব দিয়েছে ইতালি প্রশাসন। বর্তমান রেসিডেন্ট ছাড়া স্টে পারমিট নবায়ন হয়না। যাদের রেসিডেন্ট কার্ড নেই সেন্ট্রাল থানা তাদের দশ দিনের সময় বেঁধে দেয় রেসিডেন্ট করে আনার জন্য।
অপরাধীকে দ্রুত শনাক্ত করতে স্থায়ী ঠিকানা (পার্মানেন্ট রেসিডেন্টকে) বাধ্য করেছে সরকার। যার ফলে বাংলাদেশি অভিবাসীরা এখন ভয় ও আতংকে দিন কাটাচ্ছে। কারণ বাংলাদেশি অভিবাসীদের বেশির ভাগেরই রেসিডেন্ট নেই।
আর যার আছে তা প্রয়োজনে ব্যবহার করে তারপর এক বছরের মধ্যে বাসার মালিক ওই রেসিডেন্ট কেটে দেয়। তাই একজন বাংলাদেশি একটি নির্দিষ্ট ঠিকানা দেখাতে পারে না। এর ফলে প্রশাসন বিব্রতবোধ করে এবং কোনো অপরাধী অপরাধ করে দ্রুত পার পেয়ে যায় বলে প্রশাসন মনে করে। এজন্য একজন মানুষকে সহজে খুঁজে বের করতেই রেসিডেন্টের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে দেশটির সরকার।
গত বছর ফ্রান্সে সিরিজ বোমা হামলার রেশ ধরেই ইতালিতে রেসিডেন্টের গুরুত্ব বাড়ানো হয়েছে। ফ্রান্সের বোমা হামলার রেশ বাংলাদেশিরা কাটিয়ে না উঠতেই ব্রাসলেসে বোমা হামলা করে দুর্বৃত্তরা। এটি বর্তমান বাংলাদেশিদের জন্য একটি ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে।
ইতালির প্রতিটি মেট্রো স্টেশনে আর্মি ও পুলিশ কড়া নিরাপত্তা দিচ্ছে। মেট্রো চলাচলে বাংলাদেশিরা ভয় ও আতংকে রয়েছে।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানায়, মেট্রো চলাচলে আমাদের সতর্ক থাকতে হয়। প্রশাসন কোনো কারণ ছাড়াই দাঁড় করিয়ে সেন্ট্রাল থানায় ফোন দিয়ে ডকুমেন্টস কন্ট্রোল করে। তাই একটু ভয়ে থাকতে হয়। আর যাদের বৈধতা নেই তাদেরতো আরো বেশি সমস্যায় দিন কাটে।
এদিকে অভিবাসীদের বাসা ভাড়াও আগের মত দিতে চায়না বিভিন্ন এজেন্সি। যার ফলে রেসিডেন্স সমস্যা আরো ঘনীভূত হয়েছে। যা কোনো ভাবেই সমাধানের লক্ষণ দেখছেন না প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
এ ব্যাপারে ইতালির বাংলাদেশ সমিতির সভাপতি নুরে আলম সিদ্দিকী বাচ্চু বলেন, যে সমস্ত বাংলাদেশিরা ২৪ মার্চের পরে স্টে পারমিট নবায়ন করতে সেন্ট্রাল থানায় রেসিডেন্স ছাড়া জমা দিয়েছে। তাদেরকে প্রশাসন কোনো প্রকার হয়রানি করবে না। এর সম্পূর্ণ দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের। আর যারা মার্চের পূর্বে রেসিডেন্স ছাড়া পারমিট নবায়ন করতে দিয়েছে। পুলিশ দশ দিন সময় বেঁধে দিয়েছে রেসিডেন্স সমস্যা সামাধান করতে। ওই বাংলাদেশিদের আপাতত দেশে না যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি জানান, এমনটা হলে বাংলাদেশ থেকে পুনরায় ইতালি ইমিগ্রেশনে আসলে ভেতরে প্রবেশ করার আগেই তাকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিতে পারে রেসিডেন্ট না থাকার কারণে।
ইতোমধ্যে ইমিগ্রেশন প্রশাসন এরকমটা করেছে বলে বাংলাদেশি অভিবাসীরা জানায়।
উল্লেখ্য, রেরিডেন্স সমস্যা শিথিলের দাবিতে ইতোপূর্বে কয়েকবার আন্দোলন করেছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা।