চট্টগ্রামে আল জামি নামে একটি এজেন্সির ভুলের কারণে অর্ধশতাধিক ওমরাহ হজযাত্রীকে ফেরত আসতে হয়েছে। এসব ওমরাহ যাত্রীকে দুবাইয়ের শারজাহ বিমানবন্দর থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ফেরত আসা বেশিরভাগ যাত্রীই চট্টগ্রামের অধিবাসী। মঙ্গলবার রাত ১০টায় এয়ার এরাবিয়ার একটি ফ্লাইটে তারা চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ফেরত আসেন। একই ফ্লাইটে তারা সোমবার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে জেদ্দার উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছিলেন। এক মাসের পরিবর্তে ১৫ দিনের ভিসা প্রদান এবং ভিসার মেয়াদ ১ দিন কম থাকার কারণেই ওমরাহ যাত্রীদের শারজাহ থেকে সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন করতে দেয়া হয়নি।
ফেরত আসা ওমরাহ যাত্রীরা জানান, তারা নগরীর রিয়াজুদ্দিন বাজারের রহমান সেন্টারে অবস্থিত আল জামি ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে ওমরাহ ভিসা ইস্যু করান। ট্রাভেল এজেন্সি ৩০ দিনের ভিসার জন্য টাকা নিলেও ভিসা ইস্যু করান ১৫ দিন মেয়াদের। নিয়ম অনুযায়ী ১৫ দিনের মেয়াদের ভিসার ক্ষেত্রে ১৫ দিনের মধ্যেই সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন করতে হয়। তা না হলে সৌদি আরবে প্রবেশের সুযোগ থাকে না। আল জামি ট্রাভেল এজেন্সি ওমরাহ যাত্রীদের চট্টগ্রাম-জেদ্দা সরাসরি ফ্লাইট দেয়ার কথা থাকলেও তারা ফ্লাইট দেন চট্টগ্রাম-শারজা টু জেদ্দা।
সূত্র জানান, ২০ জুন সকাল ১০টা ১০ মিনিটে এয়ার এরাবিয়ার একটি ফ্লাইট (নম্বর জি-৯ ৫২২) শারজাহর উদ্দেশে যাত্রা করেন। ফ্লাইটটি দুপুর ১টা ১০ মিনিটের (বাংলাদেশ সময়) দিকে শারজাহ বিমানবন্দরে পৌঁছে। শারজাহ বিমানবন্দরে দুপুর ২টায় ইমিগ্রেশন করাতে গেলে কর্তৃপক্ষ তাদের আটকে দেন। তাদের বলা হয়, ভিসার মেয়াদ একদিন কম। অর্থাৎ সৌদি আরবে প্রবেশের জন্য কমপক্ষে ১৫ দিন ভিসার মেয়াদ থাকতে হয়। কিন্তু ওমরাহ যাত্রীদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ভিসার মেয়াদ আছে ১৪ দিন। অর্থাৎ একদিন কম। এ অবস্থায় সব যাত্রীকে প্রায় একদিন এক রাত আটকে রেখে একই ফ্লাইটে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে ফেরত আসেন এসব যাত্রী।
শারজাহ থেকে ফেরত আসা ওমরাহ যত্রী সাতকানিয়ার বাসিন্দা ওচমান আলী বুধবার বলেন, সবকিছু নিয়ে প্রতারণা ঠিক না। সাধারণত এক মাসের ওমরাহ ভিসার খরচ ১ লাখ টাকার কম হলেও তাদের কাছ থেকে আল জামি ট্রাভেল এজেন্সি আদায় করেছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা করে। তারপরও তারা ভিসা ইস্যু করেছে ৩০ দিনের বদলে ১৫ দিনের। এজেন্সি যে ১৫ দিনের ভিসা ইস্যু করেছে তা তাদের জানানো হয়নি। ট্রাভেল এজেন্সির এ প্রতারণার কারণে রমজান মাসে শারজাহ বিমানবন্দরে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাদের। আল্লাহর ঘর জিয়ারত করার নিয়ত করে ওমরাহ করতে গিয়ে ট্রাভেল এজেন্সির প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি। এ কারণে নারী-পুরুষসহ অর্ধশতাধিক ওমরাহ যাত্রী শারজাহ বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রামে ফিরে এসেছেন বলে জানান তিনি।
শারজাহ বিমানবন্দর থেকে ওমরাহ যাত্রী ফেরত আসার কথা স্বীকার করে আল জামি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক জাহাঙ্গীর আলম বুধবার দুপুরে বলেন, আমরা (আল জামি ট্রাভেল) ভিসা ইস্যু করিয়েছিলাম গাল্ফ ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে। তারা যে ১৫ দিনের ওমরাহ ভিসা ইস্যু করেছিল তা আমাদের জানায়নি। ফলে ওমরাহ যাত্রীদের ফেরত আসতে হয়েছে।’