ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের অগ্রযাত্রায় রেকর্ড যার নিত্যসঙ্গী

1463071081ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারী বিমান সংস্থা। বাংলাদেশের বিমান পরিবহন খাতে ইউএস-বাংলা সর্বশেষ সংযোজন। অনেক উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলা বাংলাদেশের এভিয়েশন শিল্প খুব বেশী সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে যেতে পারেনি। নানা প্রতিবন্ধকতা আর সঠিক পরিকল্পনার অভাবে এই শিল্প খুব বেশী সাফল্যের মুখ দেখাতে পারেনি। এর মাঝেও দু-একটি এয়ারলাইন্স সকল প্রতিবন্ধকতাকে ঊর্ধ্বে রেখে নানা সফলতার পালক পরিধানের চেষ্টা করে যাচ্ছে, এর মধ্যে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স অন্যতম।

১৭ জুলাই ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সর্বপ্রথম বাংলাদেশের সকল চালু বিমান বন্দরে ধারাবাহিকভাবে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে। যার ফলে সারা দেশের আকাশপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়েছে সুদৃঢ়। ২০১৪ সালের পূর্বে যেখানে অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রী সংখ্যা ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে সেখানে ইউএস-বাংলা’র ফ্লাইট অপারেশন শুরুর পর ২০১৫ সালে বাংলাদেশের অতীত সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীসংখ্যার হার ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা অচিন্তনীয়, অভাবনীয়। তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যে থেকেও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ইতিমধ্যে অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী সংখ্যার অর্ধেকের বেশী বহন করতে সক্ষম হয়েছে। যাত্রা শুরুর পর প্রথম দু’বছরে জাতীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ অন্যান্য বেসরকারী বিমান সংস্থা যেখানে ৮-৯ হাজারের বেশী ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারেনি সেখানে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স দুই বছরের কম সময়ে ১৩,৮০০ ফ্লাইট পরিচালনা করেছে, যা একটি রেকর্ড।

স্বাধীনতা পরবর্তী ইউএস-বাংলা’ই একমাত্র প্রাইভেট এয়ারলাইন্স যা জাতীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য পাইলট, কেবিন ক্রু দিয়ে সহায়তা করেছে, যা এভিয়েশন সেক্টরে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যাত্রীদের প্রত্যক্ষ ভোটে অভ্যন্তরীণ রুটে ‘বেস্ট এয়ারলাইন অব দ্যা ইয়ার-২০১৫’ নির্বাচিত হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ট্রাভেলার্স ফোরাম কর্তৃক ২০১৪ ও ২০১৫ সালে পরপর দু’বছর ‘বেস্ট ডমেস্টিক এয়ারলাইন অব দ্যা ইয়ার’ এ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছে। “ফ্লাই ফাস্ট-ফ্লাই সেফ” স্লোগান নিয়ে যাত্রা শুরু করা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনায় সর্বাধিক ৯৮.৭% অন-টাইম পারফরমেন্স প্রমান করতে সক্ষম হয়েছে- যা একটি রেকর্ড।

অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী সকল প্রাইভেট এয়ারলাইন্স এর মধ্যে ইউএস-বাংলা’র ড্যাশ৮-কিউ৪০০ সিরিজের কানাডিয়ান বোম্বারডিয়ার তৈরী এয়ারক্রাফটই সবচেয়ে বেশী আসন ব্যবস্থা সম্পন্ন। প্রতিটি এয়ারক্রাফটের আসন সংখ্যা নূন্যতম ৭৬। ক্ষীপ্রগতিসম্পন্ন এয়ারক্রাফট ড্যাশ৮-কিউ৪০০ ঘন্টায় ৬৬৭কিমি বেগে চলে। উচ্চ গতিসম্পন্ন হওয়ায় বাংলাদেশে মৌসুমী আবহাওয়াকালীন সময়ে এয়ারক্রাফট ও যাত্রী উভয়েই নিরাপদ থাকে। আবহাওয়া, গতি ও দুরত্ব ভেদে ২৫ হাজার ফুট উপর দিয়েও চলাচল করতে পারে ইউএস-বাংলা’র এয়ারক্রাফট। সারা বিশ্বে ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফটের সেফটি রেকর্ড প্রায় শতভাগ।

দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর রয়েছে নিজস্ব ক্যাটারিং ও ইউনিফর্ম এর স্টান্ডার্ড বজায় রাখার জন্য রয়েছে নিজস্ব টেইলারিং ব্যবস্থা যা অন্য কোনো প্রাইভেট এয়ারলাইন্স এর বর্তমানে কিংবা নিকট অতীতে কারোরই অবকাঠামোগত পরিকল্পনার মধ্যে ছিল না।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর যাত্রা শুরু করার পূর্বে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী এয়ারলাইন্সগুলোর কিছু বিষয় উল্লেখযোগ্য ছিল, সেগুলো হচ্ছে নিময়ানুবর্তীতা মেনে না চলা, এয়ারক্রাফটের অভ্যন্তরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা কাজ না করা, যা যাত্রীদের বিমান পরিবহন ব্যবস্থার উপর বিরূপ ধারনা পোষণ করতো। কিন্তু ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সেই সকল ভ্রান্ত ধারনা থেকে যাত্রীদের রেহাই দিয়েছে। যার কারনে গত দু’বছর আকাশপথে অভ্যন্তরীণ রুটে রেকর্ড সংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করেছে।

সময়োপযোগী আধুনিক ও সহজবোধ্য রিজার্ভেশন সিস্টেম ‘জেনিথ’ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সকে করেছে ব্যবসাবান্ধব। অন-লাইন টিকেটিং ব্যবস্থায় রয়েছে সহজে টিকেট কনফার্ম করার কার্যকর ব্যবস্থা। সারাদেশে ৩০টির অধিক নিজস্ব সেলস্ অফিস ও প্রায় দু’হাজার ট্রাভেল এজেন্সি সরাসরি ইউএস-বাংলা’র টিকেট বিক্রয়ের সাথে সম্পৃক্ত।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে জিইসি মোড় পর্যন্ত, যশোর বিমান বন্দর থেকে খুলনার শিববাড়ী মোড় পর্যন্ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ওয়াই-ফাইযুক্ত বাস সার্ভিস রয়েছে। এছাড়া সৈয়দপুর থেকে দিনাজপুর ও রংপুর পর্যন্ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মাইক্রোবাস সার্ভিস এর ব্যবস্থা আছে।

দেশীয় বিমান পরিবহনখাতে ইউএস- বাংলা এয়ারলাইন্স-ই একমাত্র কোম্পানী যা আইএসও ৯০০১:২০০৮ সার্টিফাইড এয়ারলাইন্স। আমেরিকার নিউইয়র্ক সিটির ডিভিশন অব কর্পোরেশন এর একমাত্র তালিকাভূক্ত বাংলাদেশী এয়ারলাইন কোম্পানী। আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা রয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে, যার মধ্যে রয়েছে ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লাইয়ার প্রোগ্রাম “স্কাই স্টার”, ডোর স্টেপ সার্র্ভিস প্রোগ্রামসহ আরো অনেক সেবাধর্মী ও সময়োপযোগী সার্ভিস।

ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের জন্য রয়েছে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ আন্তর্জাতিক গন্তব্য হিমালয় কন্যা নেপালের কাঠমুন্ডু, নাগরকোট, পোখারাতে রয়েছে আকর্ষণীয় প্যাকেজ সুবিধা।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে দু’টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট ও একটি ড্যাশ ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট বিমান বহরে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে কলকাতা, পারো, কুয়ালা লামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া এ বছরের মধ্যে দোহা, মাস্কাট, দাম্মাম, দুবাই, কুনমিং রুটে ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ।

সার্বিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশের বিমান পরিবহন সেক্টরে যাত্রী সাধারনের কাছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স’ই প্রথম পছন্দ। বেস্ট ডমেস্টিক এয়ারলাইন্স এর ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দক্ষিণ এশিয়ার একটি স্বনামধন্য এয়ারলাইন্স এ পরিনত হতে চায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, যা দেশের সুখ্যাতি বয়ে আনবে

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.