জনগণ পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফারাক্কা দিবস উপলক্ষে বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৬ মে ফারাক্কা দিবস আমাদের জাতীয় আন্দোলনের এক ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ দিন। আজ থেকে ৪৮ বছর আগে অবিসংবাদিত মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ডাকে সারাদেশ থেকে লাখো জনতা ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত গঙ্গা নদীর পানি আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ন্যায্য হিস্যা আদায়ের সংগ্রামে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিল লংমার্চে অংশ নেয়।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ভারতে গঙ্গা নদীর ফারাক্কা পয়েন্টে বাঁধ নির্মাণ করে অভিন্ন নদীর পানি একতরফা প্রত্যাহার শুরু করা হয়। যার ফলে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল আজ প্রায় মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। ওই এলাকায় পানিসহ নানাবিধ প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে। জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশগত মানকে বিবেচনা না করে এবং প্রাকৃতিক ও মানবিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনাকে উপেক্ষা করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের মতামতকে অগ্রাহ্য করে ভারতকে কয়েক দিনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালুর অনুমতি দেয়। কিন্তু সেই বাঁধ অব্যাহতভাবে আজ পর্যন্ত চালু আছে। এ বাঁধ এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
তৎকালীন আওয়ামী সরকারের কারণে এ দেশের জনগণ পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ বঞ্চনা ও দেশের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে জনদুর্দশার আশঙ্কায় প্রাজ্ঞ ও দূরদর্শী মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিল করে ভারত সরকারের কাছে প্রতিবাদ করেন এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন। তখন থেকে ব্যাপক মানববিপর্যয় সৃষ্টিকারী ফারাক্কা বাঁধের বিষয়টি আন্তর্জাতিক পরিসরে আলোচিত হতে থাকে।
ফারাক্কা দিবসের তাৎপর্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক মনে করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইন-কানুন ও কনভেনশনের তোয়াক্কা না করে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত ৫৪টি অভিন্ন নদীতে একের পর এক বাঁধ নির্মাণে নদীর ধারাকে বাধাগ্রস্থ করে একতরফা নিজেদের অনুকূলে পানি প্রত্যাহার বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ নিষ্ফলা উষর ভূমি হয়ে উঠার আলামত এরই মধ্যেই ফুটে উঠেছে। সুতরাং ১৬ মে ১৯৭৬, মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে রাজশাহী থেকে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিল ন্যায্য পাওনা আদায়ের সংগ্রামে জনগণ অকুতোভয় সাহসী পদক্ষেপে এগিয়ে গিয়েছিল। তাই প্রতি বছর ১৬ মে ‘ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস’ যেকোনো অধিকার আদায়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে।