কুমিরা-গুপ্তছড়া ফেরী স্টেশন স্থাপনের স্থান পরিদর্শনে বিআইডব্লিউটিএ
মিলাদ মুদ্দাচ্ছির, চট্টগ্রাম (সন্দ্বীপ) প্রতিনিধি
সীতাকুণ্ডের কুমিরা–সন্দ্বীপ নৌপথে ফেরী চলাচলের স্টেশন স্থাপন ও অবকাঠামো নির্মানের জন্য সাইট সিলেকশন ও সন্দ্বীপকে উপকূলীয় বন্দর ঘোষণার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বিআইডব্লিউটিএ প্রতিনিধি দল আজ রবিবার সকাল ১০ টায় সীতাকুণ্ড কুমিরা ঘাটে ও বেলা ১২ টায় গুপ্তছড়া ঘাটে সাইট পরিদর্শন শেষে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধি, জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি, জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি, রাজনৈতিক, সামাজিক নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন।
প্রসঙ্গত সন্দ্বীপে ৫ লক্ষ মানুষের বসবাস রয়েছে । এই বিপুল জনগোষ্ঠি প্রতিনিয়ত জীবন বাজী রেখে নৌ পথে চলাচল করে। সন্দ্বীপ এবং সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন ঘাট ব্যবহার করে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী চলাচল করেন। চট্টগ্রামসহ সারাদেশের সাথে সন্দ্বীপের মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যমই হচ্ছে এই নৌপথ। কিন্তু কোন নিরাপদ নৌ-রুট অবকাঠামো গড়ে না উঠায় হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ ঠেকেছে চরমে। বিভিন্ন সময় নৌ-ডুবিতে প্রাণহানীর ঘটনায়, যাতায়াতে আতংকিত থাকে এই জনপদের বাসিন্দারা।
অবশেষে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে সীতাকুণ্ড–সন্দ্বীপ নৌ রুটের উন্নয়নের স্বার্থে ফেরী চালু করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে। ফেরীঘাটের জন্য নির্মাণ করতে হবে উপযোগী অবকাঠামো।
সন্দ্বীপের কুলে ফেরীঘাট স্টেশনে স্থাপনে অবকাঠামো নির্মাণের জন্য সাইট সিলেকশন করা হয় রবিবার। সন্দ্বীপের ফেরীঘাট স্টেশনের পয়েন্টে নির্ধারণে বিআইডব্লিউটিএ প্রতিনিধি ও সাইট সিলেকশন কমিটির আহ্বায়ক সহ কমিটির সদস্যরা স্পিড বোট করে গুপ্তছড়া ঘাটের বিভিন্ন স্হান ঘুরে দেখেন।
অতঃপর, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধি, জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি, রাজনৈতিক, সামাজিক নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকদের মতামত শুনেন বিআইডব্লিউটিএ প্রতিনিধি দল।
এই সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি মোসলেহ্ উদ্দিন খান জুয়েল তার বক্তব্যে সলিমপুর ও ছোয়াখালি অংশে ওয়েব ব্রেকার স্থাপন করে নদী শাসন এবং ওয়াটার মডেলিং ও সেডিমেন্ট মডেলিং সার্ভে করে টেকসই ড্রেজিং নিশ্চিত করার দাবী জানান।
সন্দ্বীপ উপজেলা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবে মানবাধিকার কর্মী ও সন্দ্বীপ রিপোর্টার্স ক্লাবের সেক্রেটারী জনাব মিলাদ মুদ্দাচ্ছির “সী হারবার” নির্মাণের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নের আহবান জানান
এছাড়াও নৌ যাতায়াতের দূর্ভোগ নানান বিষয়ে আরো কথা বলেন সিনিয়র সাংবাদিক সালেহ নোমান, ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান কাউছার, নাছিরুল কবির মনির তালুকদার, সাবেক ছাত্রনেতা আশ্রাফ উদ্দিন জনি, এবি কলেজের সাবেক জিএস আবুল বশার, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন প্রতিনিধি , এডভোকেট সেকান্দর বাদশা, সন্দ্বীপ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফয়সাল, সংবাদকর্মি ইলিয়াছ সুমন ও শামসুল আজম মুন্না।
মতামত শুনে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন সাইট সিলেকশন কমিটির আহ্বায়ক বিআইডব্লিউটিএর(এস্টেট ও আইন) অতিরিক্ত পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দীন। তিনি বলেন বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে সন্দ্বীপের প্রবাসীদের আয়ের একটি বড় রেকর্ড পরিমান অবদান রয়েছে। নিরাপদ নৌ-পথ সন্দ্বীপের মানুষের ন্যায্য হিসসা। গুপ্তছড়া কুমিরা নৌ রুটটি হল প্রকৃতিক ভারসাম্যর উপর নির্ভর। নিরাপদ নৌ-পথ নিশ্চিতে মাননীয় উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের ঐকান্তিক আন্তরিক নির্দেশের কথাও বলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, আমরা সিলেকশন করে নেয়ার পর বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান ও উপদেষ্টারা ভিজিট করবেন, আমরা পরিদর্শন ও আলোচনার ভিত্তিতে প্রাথমিক চিত্র তুলে ধরব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সন্দ্বীপ নদী সিকিস্তি পুনর্বাসন আন্দোলনের নেতা মনিরুল হুদা বাবন, নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব ছন্দা পাল, বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক মুহাম্মদ মোবারক হোসেন ও সবুর খান, বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের নির্বাহি প্রকৌশলী রেজাউল রশিদ খন্দকার, বিআইডব্লিউটিএর হাইড্রোগাফি বিভাগের সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ শরফুদ্দিন, বিআইডব্লিউটিএ (বন্দর ও পরিবহন) চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান, উপপরিচালক নয়নশীলসহ অনেকে।