যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছেন, ইসরায়েল তার ‘লক্ষ্য’ অর্জন করেছে। গাজায় যুদ্ধ শেষ করার সময় এসেছে। দ্রুত যুদ্ধ থামানোর নির্দেশনা না মানলে ইসরায়েলকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে পড়তে হতে পারে বলেও তিনি সতর্ক করেন।
গতকাল বুধবার (১৩ নভেম্বর) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্লিঙ্কেন এই সতর্কবার্তা দেন।
এর আগের দিন ইসরায়েলের কৌশলগত সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী রন দারমারের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন তিনি। ব্লিঙ্কেন জানান, ইসরায়েল গাজায় তাদের হামলার লক্ষ্য সম্পর্কে জানিয়েছে; তারা হামাসকে দুর্বল করে ৭ অক্টোবরের হামলার জবাব দিতে চায়। কিন্তু ওয়াশিংটনের মতে, এই লক্ষ্য ইতোমধ্যেই পূর্ণ হয়েছে, তাই এখনই যুদ্ধ থামানো উচিত।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ইসরায়েলের সহযোগিতা পেলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের মধ্যপ্রাচ্য সংকট থেকে বের করে আনার পথও খুঁজে বের করবে। এতে করে ইসরায়েল যেমন এই যুদ্ধে থেকে সরে আসতে পারবে, তেমনি হামাসও আগের অবস্থায় ফিরতে পারবে না।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় ইসরায়েলে ১,২০০ জন নিহত এবং ২৪২ জন জিম্মি হয়। জবাবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজায় ব্যাপক আক্রমণ চালায়, যা এখনও চলছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একাধিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েল তার সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে এখন পর্যন্ত এই যুদ্ধে গাজায় ৪৩ হাজার ৬০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহতের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। প্রায় ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যারা খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র সংকটে রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশে কোনো বাধা দিচ্ছে না। তবে আটটি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার মতে, গাজায় সহায়তার প্রবেশের সুযোগ বাড়াতে ইসরায়েল কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে গাজা উপত্যকায় খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কিছু এলাকায় দুর্ভিক্ষ আসন্ন বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইসরায়েলকে দেওয়া এই সতর্কবার্তা গাজা যুদ্ধের বিষয়ে নতুন করে ভাবতে উৎসাহিত করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।