চট্টগ্রামে সম্প্রতি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নতুন ঐক্যজোট দাবি করেছে সরকার, রাষ্ট্র এবং প্রশাসনের একটি পক্ষ দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ইন্ধন দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘এটার উত্তর আপনারা সবচেয়ে ভালো দিতে পারেন। আপনি এটা লেখেন, আমরা কোনো কিছু কারও ক্ষতি করছি না। আপনারা অনুসন্ধান করে বলেন। আর উস্কানির বিষয় তো আগেই বললাম। পার্শ্ববর্তী দেশ উস্কানি দিচ্ছে।’
গত মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন। তবে পার্শ্ববর্তী দেশ বলতে কাদেরকে বুঝানো হচ্ছে এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেননি তিনি। এ সময় আইজিপি ময়নুল ইসলাম, র্যাবের ডিজি অতিরিক্ত আইজিপি একেএম শহিদুর রহমানসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আপনাদের (সাংবাদিক) কাছে অনুরোধ মিথ্যা সংবাদ দিবেন না। এতে পার্শ্ববর্তী দেশ সুবিধা পেয়ে যায়। আমাদের দেশের মিডিয়ার যে একটা সুনাম আছে, পার্শ্ববর্তী দেশের মিডিয়ার কিন্তু কোনো সুনাম নেই। তারা মিথ্যাটাই প্রচার করে বেশি। আর এটা কিন্তু কাউন্টার করতে পারেন আপনারা (সাংবাদিক)।’ এ সময় পুলিশের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পুলিশের মনোবল আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রাফটা নিচের দিকে নেমে গেলে খারাপ। গ্রাফটা কিন্তু আস্তে আস্তে উপরের দিকে উঠেছে। মনোবল দুইদিনে চেঞ্জ হয় না। একটু সময় লাগে। আপনারা সময় না দিলে এটা সম্ভব না। আমার কাছে জাদুর মতো কিছু নাই যে বললেই সব হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘যারা জয়েন করেনি তারা আমাদের চোখে ক্রিমিনাল। তাদের আইনের আওতায় অবশ্যই আনা হবে। আপনারা খোঁজ দিতে পারলে আমি ধরবো। আপনারা খোঁজ নিয়ে জানান।’
সম্প্রতি পাকিস্তান থেকে আসা জাহাজ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই জাহাজটা মিডল ইস্ট থেকে এসেছে। সেখান থেকে এসে একটা দেশে গেছে, সেখান থেকে আমাদের দেশে এসেছে। আমাদের দেশে কোনো দেশের জাহাজ আসা নিষিদ্ধ আছে? আমরা কি কারও কাছে বন্দি যে শুধু তাকেই সেবা করবো? আমার দেশ সবার ওপরে। খেজুর, পিয়াজ, আলু এগুলো সামনের রোজার সময় দরকার। এগুলো কি আমরা আসতে দেবো না? যারা এগুলো রটাচ্ছে তারা আমাদের শত্রু।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো সময় ভালো ছিল? আপনারা বলেন? এই যে একটি পূজা গেল, পূজাটি কতো সুন্দরভাবে হয়ে গেল। আজ আমরা একটি মতবিনিময় সভা করেছি। বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কীভাবে আরও উন্নতি করা যায় এ ব্যাপারে আলাপ হয়েছে। এ ব্যাপারে আপনাদের সাহায্য এবং সহযোগিতা চাই। পরিস্থিতির অবশ্যই উন্নতি হবে।
পুলিশের মনোবল আগের চেয়ে বেড়েছে। গ্রাফটা নিচের দিকে নেমে গেলে খারাপ। গ্রাফটা কিন্তু আস্তে আস্তে উপরের দিকে উঠেছে। মনোবল দুইদিনে চেঞ্জ হয় না। একটু সময় লাগে। আপনারা সময় না দিলে এটা সম্ভব না। আমার কাছে জাদুর মতো কিছু নাই যে বললেই সব হয়ে যাবে। যোগদান না করা পুলিশ সদস্যরা আইনের দৃষ্টিতে অপরাধী উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা জয়েন করেনি তারা আমাদের চোখে ক্রিমিনাল। তাদের আইনের আওতায় অবশ্যই আনা হবে।
তিনি বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডে চট্টগ্রামে অন্তত ৫০ জন অস্ত্রধারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে সিএমপি শুধু একজন এবং র্যাব চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এমনকি অস্ত্রও উদ্ধার করা যায়নি, সাংবাদিকের দেয়া এমন তথ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পুলিশ কমিশনার ও র্যাবের অধিনায়ককে তাদের তালিকা করে গ্রেপ্তার করার তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন। উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের যে ভুল হয় না, তা না। আমাদের ভুল হলে ধরিয়ে দিন। আপনি বলে দিন যে, স্যার আপনি এই এই জিনিসটা খারাপ করছেন, আপনি পয়সা মারছেন।’