লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলা অব্যাহত আছে। এদিকে সর্বশেষ হামলায় লেবাননে আরও ৩১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। নিহতদের বেশির ভাগই দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দা। যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই এই হামলা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আজ মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
জাতিসংঘ-সহ বিশ্বের অধিকাংশ পশ্চিমা দেশের চোখ ইসরাইলের দিকে। কারণ মঙ্গলবার ইসরাইলের মন্ত্রিসভা হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘর্ষ-বিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করবে। বিশ্বনেতাদের আশা, সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাবে রাজি হবে ইসরাইল।
তবে আলোচনার আগে লেবাননে ইসরাইলের আক্রমণ অব্যাহত। সোমবার লেবাননের একাধিক জায়গায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। যার জেরে অন্তত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
লেবাননের জাতীয় সংবাদসংস্থা এনএনএ সোমবার বিকেলে দাবি করেছে, দেশের তিনটি অঞ্চল– হারেট, রেইক এবং শিয়াতে হামলা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অধিকাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ লেবাননে। চারজনের মৃত্যু হয়েছে পূর্ব দিকের অঞ্চলে।
এদিকে ইসরাইলের সেনা দাবি করেছে, তারা অন্তত ২৫টি হিজবুল্লাহর ঘাঁটি ধ্বংস করতে পেরেছে এদিন।
থেমে নেই হিজবুল্লাহও। সোমবার দিনভর একের পর এক রকেট হামলা চালানো হয়েছে ইসরাইলের সীমান্ত এলাকায়। উল্লেখ্য, রোববার তারা ইসরাইলের রাজধানী-সহ একাধিক অঞ্চলে ২৫০টি রকেট ছুঁড়েছিল।
সংঘর্ষ-বিরতির আলোচনা
জাতিসংঘের পাশাপাশি ফ্রান্স, অ্যামেরিকা, জার্মানি, ইটালির মতো একাধিক দেশ আশা করছে মঙ্গলবার ইসরাইলের মন্ত্রিসভা হিজুল্লাহর সঙ্গে সংঘর্ষ-বিরতির প্রস্তাবে সম্মত হবে। সোমবার অ্যামেরিকার জাতিও নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আমাদের ধারণা, সংঘর্ষ-বিরতির প্রস্তাবটি এবার সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। তার বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এবার ইসরাইল সহমত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেছেন, আগের আলোচনাগুলি থেকে এবারের আলোচনা অনেক বেশি ফলপ্রসূ হয়েছে। তা-ই আমি আশাবাদী।
তিনি জানিয়েছেন, গাল্ফ এবং আরব দুনিয়ার দেশগুলির সঙ্গে লাগাতার আলোচনা চলছে। কীভাবে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা অনেকটাই এগিয়েছে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ বলেছেন, হিজবুল্লাহ এবং ইসরাইলের মধ্যে সংঘর্ষ-বিরতির আলোচনা অত্যন্ত সদর্থক জায়গায় পৌঁছেছে। দুই তরফেরই উচিত এবার সংঘর্ষ-বিরতির প্রস্তাব গ্রহণ করা।
এর আগেও ইসরাইলের মন্ত্রিসভা সংঘর্ষ-বিরতি নিয়ে আলোচনায় বসেছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সমাধানসূত্র অধরাই থেকেছে।