সরকারি বিদেশ ভ্রমণে স্বামী/স্ত্রী-সন্তানকে সফরসঙ্গী করা যাবে না

বিদেশ ভ্রমণে উপদেষ্টা ও সচিবদের সহযাত্রী হবেন না পিএস ও এপিএসরা

সরকারি কাজে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে একটি নির্দেশনা জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার, যেখানে কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের দিকনির্দেশনায় বেশকিছু সংশোধনী আনা হয়েছে।

সফরের প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করতে, প্রক্রিয়াটি সহজ করার উদ্দেশ্যে এটি করা হয়েছে।

গত ২৩ মার্চে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের জারি করা একটি পরিপত্র অনুযায়ী, কোনো বিদেশ সফরের অনুমতি নেওয়ার আগে কর্মকর্তাদের ওই সফরের প্রাসঙ্গিকতা ও গুরুত্ব সম্পর্কে আগে নিশ্চিত করতে হবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, সরকারিভাবে বিদেশ সফরে কর্মকর্তাদের স্বামী/স্ত্রী ও সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না।

এছাড়া, ঠিকাদার/ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে বিদেশ ভ্রমণ অবশ্যই পরিহার করতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, জরুরী কারণ ব্যতীত মাননীয় উপদেষ্টা বা সিনিয়র সচিব/ সচিবদের একান্ত সচিব/ সহকারী একান্ত সচিবদেরও বিদেশ সফরে যাওয়া পরিহার করতে হবে।

 

বিদেশ ভ্রমণে উপদেষ্টা ও সচিবদের সহযাত্রী হবেন না পিএস ও এপিএসরা
গত ১৯ মার্চ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সকল সচিবদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

উপদেষ্টা ও সচিবদের বিদেশ ভ্রমণের সময় তাদের একান্ত সচিব বা সহকারী একান্ত সচিবদের সহযাত্রী হিসেবে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।

গত ১৯ মার্চ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সকল সচিবদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, “অপরিহার্য বা কোনো জরুরি কারণ ছাড়া উপদেষ্টা বা সচিবদের একান্ত সচিব বা সহকারী একান্ত সচিবদের সহযাত্রী হিসেবে বিদেশ ভ্রমণ না করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।”

এর আগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করা হয়।

ওই পরিপত্রে বেশকিছু বিষয় মেনে চলতে বলেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেখানে বলা হয় সাধারণভাবে বিদেশ ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হবে।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, বছরের সম্ভাব্য বিদেশ ভ্রমণের একটা তালিকা জানিয়ে রাখতে হবে। বিদেশ ভ্রমণের জন্য মন্ত্রণালয়ভিত্তিক ডেটাবেজ তৈরি করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার অফিস এর কাঠামো তৈরি করে দেবে এবং এর তথ্য সংরক্ষণ করবে। সকল স্তরের সরকারি কর্মকর্তারা একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করবেন।

পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ও সচিবকে একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণ পরিহার করতে বলা হয়েছে। তবে জাতীয় স্বার্থে অপরিহার্য হলে তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। বিদেশে অনুষ্ঠাতব্য সেমিনার বা ওয়ার্কশপ ইত্যাদিতে অংশ নিতে উপদেষ্টা ও সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণের প্রস্তাবের ক্ষেত্রে কোন পর্যায়ের কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং অংশগ্রহণকারী দেশ থেকে কোন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নিচ্ছেন আমন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ সেসব তথ্য উল্লেখ করবেন।

এছাড়া বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাবনায় ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা ও প্রস্তাবিত কর্মকর্তার ওই কার্যক্রমে সংশ্লিষ্টতা ও উপযোগিতার বিষয় উল্লেখ থাকতে হবে বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। কেনাকাটা, প্রি-শিপমেন্ট ইনস্পেকশন কিংবা ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপ্ট্যান্স টেস্ট ইত্যাদির ক্ষেত্রে শুধু সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পাঠানোর বিষয় বিবেচনা করতে হবে।

এছাড়া সরকারি অর্থে কম প্রয়োজনীয় ভ্রমণ অবশ্যই পরিহার করতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষা ছুটিতে যাওয়া পরিহার করবেন। বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাবনার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত কর্মকর্তার আগের এক বছরের বিদেশ ভ্রমণ বৃত্তান্ত সংযুক্ত করতে হবে।

চলতি অর্থবছরের শুরুতে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে সরকারের খরচ কমানো ও দেশের বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে অর্থ বিভাগ থেকে বিদেশ ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করে সার্কুলার জারি করা হয়।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.