বাংলাদেশ বিমানে আগুন: অল্পের জন্য রক্ষা পেলো ২০৬যাত্রী

biman-bangladesh-fireএভিয়েশন নিউজ: অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং ৭৭৭-৩০০ এয়ারবাসের (ফ্লাইট নং বিজি ০৮৫) এর ৩৭৫ জন যাত্রী। সিঙ্গাপুর আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর থেকে উড্ডয়ন করে বিমানটি। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটির ককপিটে আগুন ধরে গেলে শনিবার রাত পৌনে ৯টায় বিমানটি নিরাপদে শাহজালাল বিমান বন্দরে অবতরণ করানো হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ফ্লাইটি হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরে অবতরণের নির্ধারিত সময় ছিলো। বাংলাদেশের আকাশ সীমায় প্রবেশের পর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটির ককপিটে আগুন ধরে যায়। এসময় পাইলটরা বঙ্গোপসাগরে গিয়ে বিমান থেকে প্রায় সব জ্বালানি তেল ফেলে দেয়। সামান্য কিছু তেল রেখে প্রায় আড়াই ঘন্টা আকাশে চক্কর খায় এয়ারবাসটি। শেষে শনিবার রাত পৌনে ৯টায় বিমানটি নিরাপদে শাহজালাল বিমান বন্দরে অবতরণ করানো হয়।

পাইলটরা বিমানে থাকা স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে আকাশেই আগুন নিয়ন্ত্রণ করার চেস্টা করেন। আগুনে বিমানটির ভিতরে ধোয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে খবর দেয়া হয় কন্ট্রোলরুমে। সেখান থেকে পুরো বিমানবন্দরে জারি করা হয় রেডএলার্ট। বিমানবন্দর ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলোকে নেয়া হয় রানওয়েতে। প্রস্তুত করা হয় অ্যাম্বুলেন্সসহ যাবতীয় উদ্ধাকারী দলকে। খবর দেয়া হয় ফায়ার কেন্দ্রিয় কন্ট্রোলরুমে।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে বিমানে থাকা যাত্রী ও কেবিন ক্রুরা চরম আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়ে। তারা সবাই চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকে। অনেকে আল্লাহকে ডাকতে থাকে। কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ে। মহিলা ও শিশুরা আহাজারি বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকে। এসময় বিমানের ভিতর এক ভয়ানক পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

রাত ৯টায় বিমানটি শাহজালাল বিমান বন্দরের নর্থ ফ্রস্ট জোনে অবতরণ করানোর পর বিমানে থাকা যাত্রীদের একে একে উদ্ধার করা হয়। বিমান থেকে যাত্রীরা বলেন, আমরা সবাই নতুন জীবন পেলাম। তারা একে অপরকে এবং উপস্থিত আত্মীয় স্বজনদেরকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে।

বাংলাদেশ বিমান সূত্র জানায়, এয়ারবাসটি সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় আসছিলো। এর যাত্রী সংখ্যা ছিলো ২০৬ জন। রাডারের মাধ্যমে কন্ট্রোলরুমে খবর পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই বিমান বন্দরে দেয়া হয় রেড এলার্ট। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা খবর পেয়ে ছুটে যান বিমানবন্দরে। সাইরেন বাজিয়ে বিমান বন্দর ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো একের পর এক রান ওয়েতে নেয়া হতে থাকে। অবশেষে যাত্রীদের সবাইকে নিরাপদে নামাতে সক্ষম হয় বিমান কর্তৃপক্ষ। আশু বিপদের আশংকায় তাৎক্ষণিভাবে সবধরনের ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করে দেয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা জানায়, বিমানের তেল না ফেলা হলে অবতণের সময় বিমানটি বিস্ফোরিত হওয়ার আশঙ্কা ছিলো। এ কারণে বিমান থেকে সব তেল ফেলে অবতরণ করানো হয়।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.