এভিয়েশন নিউজ: দেশে বেসরকারি খাতের নবম এয়ারলাইনস হিসেবে কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা গ্রুপের মালিকানাধীন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। আগামী জুন থেকেই অভ্যন্তরীণ চারটি রুটে ফ্লাইট চালু হবে। এজন্য প্রপেলার ইঞ্জিনচালিত নিজস্ব দুটি উড়োজাহাজ আনার প্রক্রিয়াও চূড়ান্ত করেছে সংস্থাটি।
নতুন রুটে সেবা চালু করা প্রসঙ্গে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের সহকারী মহাব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, আগামী ২০ মের মধ্যে উড়োজাহাজ দুটি দেশে পৌঁছবে। এর পরই এয়ার অপারেটর সার্টিফিকেশনের (এওসি) জন্য আবেদন করা হবে। এওসি পেলেই আগামী জুন থেকে অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইট শুরু হবে।
বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ও নভোএয়ার নিয়মিত যাত্রী পরিবহন করছে। আর আন্তর্জাতিক রুটের সংযোগ ফ্লাইট হিসেবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেটে কিছুসংখ্যক যাত্রী পরিবহন করছে রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ারলাইনস সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। পাশাপাশি শিগগিরই অভ্যন্তরীণ সবগুলো রুটে ফ্লাইট চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে বিমান। এতে অভ্যন্তরীণ রুটে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন এয়ারলাইনসের জন্য ব্যবসায় টিকে থাকতে হলে ভালো সেবার পাশাপাশি যাত্রীদের আকর্ষণীয় ভাড়া অফার করাতে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
যাত্রীসেবা প্রসঙ্গে শফিকুল ইসলাম বলেন, অভ্যন্তরীণ রুটে নতুন এয়ারলাইনস আসায় প্রত্যক্ষভাবে যাত্রীরা উপকৃত হবেন। আর নতুন উড়োজাহাজ সংস্থা হিসেবে যাত্রীদের জন্য আকর্ষণীয় ভাড়ার পাশাপাশি নতুন পণ্য ও সেবা দেয়ার প্রচেষ্টা রয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমাদের দুটো উড়োজাহাজেই ছয়টি করে বিজনেস ক্লাস আসন রয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে চট্টগ্রাম শহরে এবং যশোর বিমানবন্দর থেকে খুলনা শহরে যাত্রীদের পরিবহনের জন্য বিলাসবহুল শ্যাটেল কোচ সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ২০১৩ সালে অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রী পরিবহন হয়েছে ৬ লাখ ৪৮ হাজার ১৯ জন। ২০১২ সালে যা ছিল ৫ লাখ ৮৯ হাজার ১০৮ জন, ২০১১ সালে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৯৫০, ২০১০ সালে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৩৩ এবং ২০০৯ সালে ৫ লাখ ৯৬ হাজার ৬১৭ জন।
উল্লেখ্য, কার্যক্রম চালুর প্রথম বছর অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে পরবর্তী সময়ে আঞ্চলিক বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে এয়ারলাইনসটির। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এয়ারলাইনস হিসেবে কার্যক্রম চালুর জন্য গত বছর ১১ এপ্রিল বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশন বিভাগ থেকে অনাপত্তি (এনওসি) সনদ পেয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস।
পাশাপাশি বৈমানিক ও ফার্স্ট অফিসার নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়াও শেষ করেছে তারা। আগামী জুনের মাঝামাঝি থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে দৈনিক নয়টি ফ্লাইট চালুর যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে এয়ারলাইনসটি। প্রাথমিকভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে দৈনিক পাঁচটি, ঢাকা-যশোর রুটে দুটি, ঢাকা-সিলেট রুটে একটি ও ঢাকা-কক্সবাজার রুটে একটি ফ্লাইট চালাবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস। পরে ঢাকা থেকে রাজশাহী ও সৈয়দপুরে ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। আর এসব ফ্লাইট পরিচালনার জন্য এরই মধ্যে ৭৬ আসনের দুটি ড্যাস-৮-কিউ-৪০০ উড়োজাহাজ কিনেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিটি উড়োজাহাজেই কার্গো পরিবহনের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।