সাগর পথে মালয়েশিয়া যাত্রা : নরসিংদীর ৪ জন নিহত

sea-deadএভিয়েশন নিউজ: সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় নরসিংদীর ৪ জন নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার নিহতদের পরিবারের কাছে খবর আসে অনাহারে তাদের মৃত্যু হয়েছে। ওই জাহাজের ৩০২ জন মালয়েশিয়াগামী শ্রমিকের মধ্যে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। যাদের অধিকাংশই কুমিল্লা, ফেনী ও নোয়াখালীর বাসিন্দা। এ নিয়ে গত এক মাসের ব্যবধানে জেলার শুধু নুরালাপুর গ্রামের ৬ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।

পরিবারের লোকজন জানায়, নুরালাপুর গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে আসাদ মিয়া, মৃত আবুল কাশেমের ছেলে কাউসার মিয়া, আবদুল বাছেদ সরকারের ছেলে মহসিন মিয়া ও লোকমান মিয়ার ছেলে মোতালিব গত ২৮ এপ্রিল বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। পরদিন তারা পরিবারকে জানায়, আড়াইহাজার উপজেলার আদম বেপারি আফাজ উদ্দিন আব্বাসের মাধ্যমে জাহাজে করে মালয়েশিয়া যাচ্ছে। এরপর থেকে তাদের সঙ্গে পরিবারের আর যোগাযোগ হয়নি।

পরিবারের লোকজন দালাল আফাজ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে জানায়, তারা ভালোভাবেই মালয়েশিয়া পৌঁছে যাবে। সেখানে পৌঁছার পর প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ করে টাকা দিতে হবে বলে সে জানায়। এরপর তাদের পরিবার টাকা জোগাড়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে গত শুক্রবার রাতে ওই জাহাজের যাত্রী আড়াইহাজার এলাকার আমিরুল নামে এক ব্যক্তি থাইল্যান্ড থেকে মৃত কাউসারের ভাই রফিজ উদ্দিনকে জানায়, অনাহারে ও নাবিকদের হামলায় জাহাজে থাকা নুরালাপুরের ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের পেট কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ গভীর সাগরে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে।

সরেজমিনে নুরালাপুর গ্রামে ওই যুবকদের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, প্রত্যেকের বাড়িতেই চলছে শোকের মাতম। নিহত মোতালিব মিয়ার বাবা লোকমান মিয়া বলেন, দালালদের খপ্পরে পড়ে আমার ছেলে সাগর পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় মারা গেছে। বাড়িতে তার বউ ও ছোট ছোট দুই ছেলে রয়েছে। নিহত আসাদের ছেলে আল আমিন বলেন, গত দুই মাস পূর্বে মোমেন চাচা সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন। তা জানা সত্ত্বেও কেন তার বাবা কাউকে না জানিয়ে একই পথে মালয়েশিয়া গেল তা তাদের জানা নেই।

একইভাবে মালয়েশিয়া যেতে গিয়ে দুই মাস যাবত নিখোঁজ মোমেন মিয়ার স্ত্রী মাছুমা বেগম বলেন, দুই মাস পূর্বে আমার স্বামী থাইল্যান্ড থেকে মোবাইলে কথা বলেছিল। স্বামীর কথামতো আমরা দালালকে দুই লাখ টাকাও পরিশোধ করি। কিন্তু এরপর আর তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আদম বেপারি আফাজ উদ্দিন আব্বাস দাবি করেন, তারা মারা যায়নি, থাইল্যান্ডের জঙ্গলে রয়েছে। তাই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না।

নরসিংদী সদর মডেল থানার ওসি কেএম আবুল কাশেম বলেন, খবর পেয়ে ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে খোঁজ নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো সেই তথ্য আমাদের হাতে পৌঁছেনি।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.