মালয়েশিয়ার সেই এমএইচ-৩৭০ বিমান নিখোঁজে দায়ী পাইলট

দিন-রাত নজরদার উপগ্রহ বাজপাখির দৃষ্টি রেখে চলেছে বিশ্বের নানা প্রান্তে। তবু স্রেফ ‘উধাও’ হয়ে গিয়েছিল এমএইচ-৩৭০। সঙ্গে নিখোঁজ হয়েছিলেন বিমানের ২৩৯ জন যাত্রী-কর্মীও। তাঁদের খোঁজে ভারত মহাসাগরের বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে তল্লাশি চলেছে। মেলেনি কিছুই। উঠে এসেছে স্রেফ ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব। বিমান-অন্তর্ধানের ছ’বছর পূর্তির আগে সেই তত্ত্বেরই একটি ফের উসকে দিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টোনি অ্যাবট। তাঁর দাবি, বিমানটির পাইলটই যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সেটিকে ধ্বংস করেছিলেন সে কথা ঘটনার সপ্তাহখানেকের মধ্যে টোনিকে জানান মালয়েশিয়ার উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।

২০১৪ সালের ৮ মার্চ কুয়ালালামপুর থেকে বেজিংয়ের দিকে রওনা দিয়েছিল মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান এমএইচ-৩৭০। নির্ঘণ্ট মেনে কিছু ক্ষণ ওড়ার পর এটিসির থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তার। কিছু ক্ষণ পর অবশ্য মালয়েশিয়ার সামরিক রেডারে ধরা পড়ে, সম্পূর্ণ উল্টো পথে উড়ছে এমএইচ-৩৭০। তার পর থেকেই গায়েব সে। বুধবার সম্প্রচারিত স্কাই নিউজের তথ্যচিত্রের একটি অংশে অ্যাবট বলেছেন, ‘মালয়েশীয় প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের তরফ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমার ধারণা, ওঁরা গোড়ার দিক থেকেই মনে করতেন এই গণহত্যা ও আত্মহত্যার নেপথ্যের কারিগর বিমানের পাইলটই। কে কাকে কী বলেছেন এ কথা আমি মোটেও বলব না। তবে এ কথা জোর দিয়ে বলতে চাই, এই গণহত্যা ও আত্মঘাতী ঘটনার চক্রী হিসেবে পাইলট ছাড়া আর কারও কথা ভাবত না মালয়েশীয় প্রশাসন।’

বিমান নিখোঁজ হওয়ার পরই জাহারি আহমেদ শাহকে নিয়ে জল্পনা ছড়াতে থাকে। তিনি যে ফ্লাইট সিম্যুলেটরে বিমান চালানো অনুশীলন করতেন, সেটিও আঁতসকাচের তলায় আসে। কাঁটাছেড়া চলে তাঁর রাজনৈতিক ভাবনাচিন্তা নিয়েও। বিমানের শেষ মুহূর্তের কিছু গতিবিধি যে তাঁর ভূমিকার দিকেই ইঙ্গিত করছে, তা-ও বলা হয়। তবে বিষয়টি প্রমাণ করা যায়নি। স্বাভাবিক ভাবে অ্যাবটের এ দিনের বক্তব্যে সে কথা ওঠায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শাহের প্রিয়জনেরা। মালয়েশিয়ার অসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রকের প্রাক্তন প্রধান আজহারউদ্দিন আব্দুল রহমানও বলেন, ‘এই জল্পনা ওঁর পরিজনদের জন্য কষ্টকর কারণ এমন অভিযোগের প্রমাণ নেই।’

বাস্তবিক। কারণ যাঁরা প্রমাণ দিতে পারতেন, প্রায় ছ’বছর পর তাঁদের হদিস মেলা নেহাতই অসম্ভব। আর ধ্বংসাবশেষ? ভারত মহাসাগরের ১ লক্ষ ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চিরুনি তল্লাশি চালিয়েও কিছুটি হাতে আসেনি। যন্ত্রণা ও ব্যর্থতা তাই এই অন্যতম ‘অ্যাভিয়েশন-মিস্ট্রির’ সঙ্গী এখনও। জল্পনাটুকু না হয় আপাতত তাকে তোলা থাক।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.