লাশ বহনের ব্যাগ রেখে নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক ট্রাম্প হোটেলের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবেলায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যর্থতাকে দায়ী করে এই প্রতিবাদ বলে জানানো হয়।
ব্রিটেনের বিখ্যাত ট্যাবলয়েড দ্য সানের খবরে এমন তথ্য মিলেছে। এর আগে ডেমোক্র্যাটসের অমার্জিত ও নোংরা বলে আখ্যায়িত করেন ট্রাম্প।
শনিবার সেন্ট্রাল পার্ক হোটেলের সামনে বেশ কয়েকটি লাশ বহনের ব্যাগ সারিবদ্ধ করে রাখা হয়। ব্যাগের ওপর লেখা ছিল, ‘হাজতে কোভিড-১৯ ভাইরাসে মৃত অভিবাসীদের প্রতিনিধিত্ব করছে এসব ব্যাগ,’ এবং ‘ট্রাম্প = লাশ’।
প্রতিবাদকারীরা নিজেদের নাম দেন ‘ফ্যাসিবাদ প্রত্যাখ্যানকারী’ বলে। বিখ্যাত হোটেলটির সামনে তাদের প্ল্যাকার্ড ধরে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা গেছে।
ক্রিশ্চিয়ান নামের এক বিক্ষোভকারী বলেন, ট্রাম্প এই ভাইরাসকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছেন। যদি আমরা এখনই এর বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়াই তাহলে হয়তো আমরা গণতন্ত্র হারাব। ভাইরাসকে তিনি ফ্যাসিস্ট এজেন্ডা বাস্তবায়নের কাজে ব্যবহার করতে পারেন।
তিনি আরও জানান, ট্রাম্পের ব্যর্থতার কারণে অনেক মৃত্যু, অনেক সংক্রমণ এবং অনেক অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। যদি ট্রাম্প এবং মাইক পেন্স সরকারে না থাকতো তাহলে আমাদের এই ক্ষতি হতো না। এ কারণেই আমরা এখানে প্রতিবাদ করতে এসেছি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে এক হাজার ৮৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে শনিবার পর্যন্ত এই বৈশ্বিক মহামারীতে দেশটিতে ৩৮ হাজার ৬৬৪ জন মারা গেছেন।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের জরিপে এমন খবর জানা গেছে।-খবর এনডিটিভির
ভাইরাসটির সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাত লাখ ৩২ হাজার ১৯৭ লোক আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের যে কোনো দেশের তুলনায় শীর্ষে রয়েছে দেশটি।
এদিকে করোনাভাইরাস মহামারীর জন্য ‘সচেতনভাবে চীন দায়ী’ হলে দেশটিকে পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মহামারীর মোকাবেলায় বেইজিংয়ের ভূমিকায় সমালোচনা বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। হোয়াইট হাউসের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার আগে চীন থেকেই তা বন্ধ করা সম্ভব হতো, কিন্তু সেটি হয়নি।
বিশ্বের দুই বৃহৎ অর্থনীতির মধ্যে কথার লড়াইয়ের মধ্যে সর্বশেষ মার্কিন বাক্যবাণ হচ্ছে ট্রাম্পের এই বক্তব্য।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোভিড-১৯ রোগের প্রকোপ মোকাবেলায় যখন দুই দেশের মধ্যে নজিরবিহীন সহায়তা দরকার, তখন তাদের মধ্যকার সম্পর্কে টানাপোড়েন বাড়ছে।
ট্রাম্প বললেন, যদি এটা কোনো ভুল হয়ে থাকে, ভুল তো ভুলই। কিন্তু তারা যদি সচেতনভাবেই দায়ী হয়, হ্যাঁ, আমি বলতে চাচ্ছি, তখন নিশ্চিতভাবেই তারা ফল ভোগ করবে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে, সেই ব্যাখ্যা দেননি এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
গত বছরের শেষ দিন উহান থেকে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের পর ট্রাম্প ও তার জ্যেষ্ঠ সহযোগীরা চীনের বিরুদ্ধে স্বচ্ছতার অভাবের অভিযোগ তুলেছেন।
আর চলতি সপ্তাহে ‘চীন-ঘেঁষা’ আখ্যা দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সহযোগিতা বন্ধ করে দিয়েছেন ট্রাম্প।
ভাইরাসটি নিয়ে বেইজিং ও ওয়াশিংটন বেশ কয়েকবার প্রকাশ্যেই বিতর্কে জড়িয়েছে। যদিও প্রথম দিকে চীন ও দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অতিরিক্ত তারিফ করেছেন ট্রাম্প।