এভিয়েশন নিউজ: চলতি হজ ফ্লাইট নির্বিঘ্ন করতে দিল্লি ও হংকং ফ্লাইট ‘সাময়িকভাবে স্থগিত’ করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। গত ২৬ আগস্ট থেকে এ দুটি রুটে ফ্লাইট স্থগিত রয়েছে। একটি জাতীয় পত্রিকায় গত মঙ্গলবার প্রকাশিত ‘দিল্লি, ইয়াঙ্গুন ও হংকং ফ্লাইট বন্ধ হলো বিমানের’ শীর্ষক সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে এয়ারলাইনসের এক ব্যাখ্যায় এসব কথা বলা হয়েছে।
এতে জানানো হয়, দিল্লি ও হংকং রুটের ফ্লাইট আগামী ৭ ও ৮ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এরপর এসব রুটে আবারও ফ্লাইট চালাবে বিমান। এ ছাড়া ইয়াঙ্গুন ফ্লাইট যথারীতি চালু রয়েছে। এ রুটে যাত্রীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। তাই ফ্লাইটটি আপাতত বন্ধ করার কথা ভাবছে না বিমান।
জাতীয় পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত দিল্লি, ইয়াঙ্গুন ও হংকংয়ের আকাশ থেকে ডানা গুটিয়ে নিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। পর্যাপ্ত যাত্রীর অভাবে এই তিন রুটে সরকারি সংস্থাটি লোকসান গুনছিল।
বিমান সূত্রে জানা যায়, এত দিন লাভ-লোকসানের হিসাব না কষেই এসব রুটে ফ্লাইট চালানো হয়েছে। সম্প্রতি ব্যয় সংকোচন তথা লোকসান কমানোর কৌশলের অংশ হিসেবে এয়ারলাইনসটি ওই তিনটি রুটে আর ফ্লাইট না চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে ২৭ আগস্ট থেকে ওই তিন রুট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। মোট ১৯টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যের মধ্যে এখন বিমানের ফ্লাইট টিকে রইল ১৬টি রুটে। আর ছোট আকৃতির উড়োজাহাজের অভাবে বছর দুয়েক ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের আটটি অভ্যন্তরীণ রুট।
এয়ারলাইনসটির মহাব্যবস্থাপক খান মোশাররফ হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, দিল্লি, ইয়াঙ্গুন ও হংকং ফ্লাইটে বরাবরই পর্যাপ্ত যাত্রীর অভাব রয়েছে। তাই সব দিক বিবেচনা করেই ফ্লাইট তিনটি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।
১০টি উড়োজাহাজের মধ্যে নিজস্ব তিনটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ দিয়ে চলতি হজ ফ্লাইট চালাচ্ছে বিমান। হজ ফ্লাইট নির্বিঘ্নে করতেই ওই তিন রুট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কি না- জানতে চাইলে মহাব্যবস্থাপক বলেন, এর সঙ্গে হজ ফ্লাইটের কোনো সম্পর্ক নেই। হজ ফ্লাইটসহ ১৬টি আন্তর্জাতিক রুটে চালানোর মতো পর্যাপ্ত উড়োজাহাজ বিমানের আছে।
ভিন্ন একটি সূত্র জানায়, যাত্রীর অভাবে ফ্রাংকফুট রুটেও নিয়মিত লোকসান হচ্ছে বিমানের; কিন্তু ওই ফ্লাইটটি রোম ফ্লাইটের সঙ্গে সংযুক্ত। সেদিক বিবেচনায় রুটটি এখনো চালু রাখা হয়েছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন গত ৯ জুন জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন, গত তিনটি অর্থবছরে বিমান লোকসান গুনেছে এক হাজার ৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। তিনি জানান, ২০১০-১১ অর্থবছরে ২২৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৫৯৪ কোটি ২১ লাখ ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১৯১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে সংস্থাটি। বিমানের উড়োজাহাজ বহরে নিজস্ব চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০, ইজারা নেওয়া দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ এবং ভাড়া নেওয়া দুটি বোয়িং ৭৩৭ ও দুটি এয়ারবাস রয়েছে। এয়ারলাইনসটির সচল ১৬টি রুট হলো- কলকাতা, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর, কাঠমাণ্ডু, দুবাই, আবুধাবি, মাস্কট, দোহা, কুয়েত, রিয়াদ, জেদ্দা, দাম্মাম, রোম, ফ্রাংকফুট ও লন্ডন।