এভিয়েশন নিউজ: এজেন্সি কর্তৃক নিয়োগ পাওয়া ২১ হজগাইডকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। নিয়োগদাতা হজ এজেন্সির স্বার্থবিরোধী কাজ এবং আগের এজেন্সির পাওনা পরিশোধ না করাসহ বিভিন্ন কারণে তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। তালিকাভুক্তরা যাতে কোনোভাবেই হজগাইড হিসেবে সৌদি আরব যেতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হাব। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি না হলেও বিষয়টি স্বীকার করে হাব সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাহার যুগান্তরকে বলেন, হজযাত্রী সংগ্রহকারী ব্যক্তিদের এজেন্সিগুলো হজগাইড হিসেবে নিয়োগ করে থাকে। চলতি বছর এ রকম ২১ জন গাইডের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তারা যাতে এবার হজে যেতে না পারে সেজন্য ধর্ম ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।
কালো তালিকাভুক্ত গাইডরা হলেন- খাজা এয়ার ট্রাভেলসের আবুল মনসুর ফারুকী, আল-মামুন ইন্টারন্যাশনালের মোঃ আবুল বাসার, ডিবিএইচ ইন্টারন্যাশনালের মোঃ আমিনুল ইসলাম, আজমল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মোঃ আমিরুল ইসলাম, আকবর ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের মোঃ সুলতান মাহমুদ, মোঃ সহিদ উল্লাহ ও মোঃ মাহবুবুর রহমান, আল ইমাম হজ কাফেলার মোঃ জসিম উদ্দিন, আল-মারিয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের আফসার আলী, গ্লোবাল ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের কাজী মোঃ হালিম, হাফিজুর রহমান ও মোঃ হযরত আলী, পটুয়াখালী ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের মোঃ মিজানুর রহমান, মাসুম এয়ার ট্রাভেলসের মোঃ রোকন উদ্দিন অপু, রাহবার হারামাইন হজ কাফেলার মোহাম্মদ বেলাল হোসেন, নারিতা ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের হাসিনুর রহমান, সাবালিয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের মোঃ রফিকুল ইসলাম, সাউথ এশিয়ান ট্রাভেলসের মোখলেসুর রহমান, ট্রাভেল নূরানীর আবদুর রশিদ, রিলেশন ট্রাভেলসের সিরাজুস ছালেকীন এবং আরব-বাংলাদেশ ট্রাভেলসের আবদুল মান্নাফ।
হাব মহাসচিব শেখ আবদুল্লাহ স্বাক্ষরিত ওই চিঠি ২৬ আগস্ট ধর্ম মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়, চলতি হজ মৌসুমে বেশকিছু হজ এজেন্সি হাবের কাছে অভিযোগ করেছে যে, গাইড নীতিমালা উপেক্ষা করে বিভিন্ন এজেন্সির নিয়োগ করা ২১ জন হজগাইড নিয়োগদাতা এজেন্সির স্বার্থবিরোধী কাজ করছে। অনেকেই এজেন্সির গত বছরের পাওনা অর্থ এখনও পরিশোধ করেননি। সংগ্রহ করা হজযাত্রী নিয়োগদাতা এজেন্সিতে না দিয়ে বেশি মুনাফার লোভে অন্য এজেন্সিতে প্রেরণ করছে। হাব এ গাইডদের নোটিশ ও ফোনের মাধ্যমে ডেকে সংশ্লিষ্ট এজেন্সির সঙ্গে বিরোধ মেটানোর চেষ্টা করলেও তারা সাড়া দেননি।
এসব বিষয় বিবেচনা করে হজগাইড নীতিমালা অনুসরণ না করা এবং নিয়োগদাতা এজেন্সির সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি পরিপন্থী কাজ করায় এ ২১ গাইডকে কালো তালিকাভুক্ত করে হাব। নীতিমালা অমান্য করে হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিপ্রায়ে এসব গাইড কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় কালো তালিকাভুক্ত হজগাইডরা যাতে এবার হজে যেতে না পারেন সেজন্য ঢাকায় অবস্থিত সৌদি আরবের দূতাবাস ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের অবহিতকরণ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।
জানতে চাইলে হাব মহাসচিব শেখ আবদুল্লাহ এ বিষয়ে যুগান্তরকে বলেন, এ বিষয়ে সতর্ক করে বেশ কিছুদিন আগেই জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। তারপরও এসব গাইড হাব বা পাওনাদার এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। হাজীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ অর্থ তসরুপের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এ কারণেই তাদের কালো তালিকাভুক্ত করে সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।
গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সম্প্রতি হাব বলেছিল ২০১৩-২০১৫ সনের জন্য হজগাইড নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কর্মরত হজগাইড কোনো কারণে এজেন্সি পরিবর্তনের প্রত্যয় গ্রহণ করলে নিয়োগদাতা এজেন্সির ছাড়পত্র এবং হাবের অনুমতি সাপেক্ষে এজেন্সি পরিবর্তন করা যাবে। ইতিমধ্যে এ ধরনের পরিবর্তন হয়ে থাকলে তা জরুরিভিত্তিতে হাব থেকে অনুমতি গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হল। এর ব্যত্যয় হলে সংশ্লিষ্ট হজগাইডকে কালো তালিকাভুক্ত করাসহ প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।