মঙ্গলবার দুপুরে শফিক রেহমানের ইস্কাটনের বাসায় এই অভিযান চলে বলে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সেখানে শফিক রেহমানের নিজের হেফাজতে রাখা সজীব ওয়াজেদ জয় সংক্রান্ত প্রাথমিক কিছু তথ্য, বাড়ি, গাড়ির নম্বর, কোথায় থাকেন, এসব… আর গোপনীয় কিছু নথিপত্র পাওয়া গেছে। তিনি এসব সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন। গোয়েন্দারা এগুলো জব্দ করেছে।”
যুক্তরাষ্ট্রে এক এফবিআই এজেন্টের কাছ থেকে পাওয়া নথি ‘নিজের কাছে থাকার কথা’ শফিক রেহমান রিমান্ডে ‘স্বীকার করার পর’ এর ভিত্তিতে পুলিশ তাকে নিয়ে বাসায় যায় বলে উপ কমিশনারের ভাষ্য।
তিনি বলেন, “শফিক রেহমান রিমান্ডে জানিয়েছেন, এফবিআই এজেন্ট রবার্ট লাস্টিক এর কাছ থেকে এ নথিপত্রগুলো যোগাড় করে তিনি নিজের সংরক্ষণে রেখেছিলেন।”
যে মামলায় শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তার তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন পুলিশের এ উপ কমিশনার।
মাশরুকুর রহমান বলেন, “শফিক রেহমান রিমান্ডে বলেছেন, তার কাছে তথ্য রয়েছে। তিনি নিজে না গেলে বাসা থেকে তা উদ্ধার করা যাবে না। সেজন্যে তাকে সঙ্গে নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ কনফিডেনশিয়াল নথিপত্র উদ্ধার করে তা জব্দ করেছে।”
এদিকে যে সময়ে ইস্কাটনে এই তল্লাশির কথা পুলিশ বলছে, তার ঘণ্টাখানেক পর পুলিশ কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে আসেন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সংরক্ষিত তথ্য পেতে ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় দণ্ডিতদের সঙ্গে ‘একাধিক বৈঠকের কথা’ শফিক রেহমান ‘স্বীকার করেছেন’।
তবে তাকে নিয়ে বাসায় তল্লাশি চালানোর কোনো তথ্য ওই ব্রিফিংয়ে মনিরুল দেননি।
জয় সম্পর্কিত ওই নথি পাওয়ার জন্য এফবিআই এজেন্ট লাস্টিককে ঘুষ দেওয়ার অপরাধে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের ছেলে রিজভী আহমেদ সিজারের কারাদণ্ড হয়।
মার্কিন আদালতের রায়ের পূর্ণাঙ্গ বিবরণে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ছেলেকে ‘অপহরণ, ভয় দেখানো ও ক্ষতি করাই’ ছিল তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্য। সিজার কিছু তথ্য বাংলাদেশি ‘একজন সাংবাদিককে’ সরবরাহ করেছিলেন এবং বিনিময়ে ‘প্রায় ৩০ হাজার ডলার’ও পেয়েছিলেন।
ওই ঘটনাটি নিয়ে ২০১৫ সালের ৩১ মে ঢাকার পল্টন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে পুলিশ, যা পরে মামলায় রূপান্তরিত হয়। ওই মামলাতেই গত শনিবার শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
গত শতকের ৮০ এর দশকে সাপ্তাহিক যায়যায়দিন সম্পাদনার মধ্য দিয়ে ব্যাপক পরিচিতি পাওয়া শফিক রেহমানের সঙ্গে পরে বিএনপির ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, সরকারের ‘নোংরা’ কূটকৌশলের অংশ হিসেবে শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।