যুক্তরাষ্ট্রে এক বছরে ১ লাখ মানুষের আত্মহত্যা

2016_04_23_12_55_20_hd9JlUxYgKbVNyc8UeANekFCgQKZrj_original (1)যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ আত্মহত্যা করেছে। সম্ভবত আর্থিক মন্দা আর হতাশা থেকেই তারা এ পথ বেছে নিচ্ছে। গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ২০১৪ সালে। শ্বেতাঙ্গ ও মধ্যবয়সীদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি রয়েছে বলে স্থানীয় ‘সেন্টার ফর ডিজেজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) সংস্থাটি জানিয়েছে।

শুক্রবার প্রকাশিত সিডিসি’রর গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৪ সালে মোট ১ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করেছে। গড়ে প্রতি ১৩ জনের একজন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। ১৯৮৬ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এটিই সর্বোচ্চ আত্মহননের ঘটনা।

সংস্থাটির মতে, দেশটিতে যারা আত্মহত্যা করেছেন তাদের প্রায় এক তৃতীয়াংশই হচ্ছে মধ্যবয়সী শ্বেতাঙ্গ। এদের মধ্যে ৪৩ ভাগই শ্বেতাঙ্গ পুরুষ এবং বাকি ৬৩ ভাগ নারী। এদের সিংহভাগেরই বয়স ৪৫ থেকে ৬৪য়ের মধ্যে। অতীতেও দেশটির শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীর মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। সম্প্রতি এই প্রবণতা তীব্রভাবে বেড়েছে।

সিডিসি বলছে, ১৯৯৯ সাল থেকে ২০১৪ সালে আত্মহত্যার পরিমাণ ২৪ ভাগ বেড়েছে। ২০১৪ সালে মোট ১৪ হাজার শ্বেতাঙ্গ মধ্যবয়সী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। এই সংখ্যা কৃষ্ণাঙ্গ, হিসপানিকস, এশীয় এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয়, আমরিকান দ্বীপপুঞ্জ ও আলাঙ্কা অঞ্চলের বাসিন্দাদের চাইতে অনেক বেশি। এইসব জনগোষ্ঠীর আত্মহননকারী সবার সংখ্যা একসঙ্গে করলেও মার্কিন শ্বেতাঙ্গদের চাইতে বহু কম। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষ্ণাঙ্গ ও বৃদ্ধ বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার কিন্তু বেশ কমেছে। গবেষণায় দেখা যায়, ৭৫ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর আর তারা আত্মহত্যা করে না। আত্মহত্যা বাড়লেও ক্যান্সার ও হৃদরোগের মত অসুখে মার্কিনীদের মৃত্যুর হার কিন্তু বেশ কমেছে।

তবে দেশটিতে আত্মহত্যা কেন বেড়েছে এবং এর প্রতিকারের উপায়ই বা কি, সে বিষয়ে সংস্থাটি কিছু জানায়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০০৮ সাল থেকে দেশটিতে যে আর্থিক মন্দা শুরু হয়েছে তা আত্মহত্যায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। তবে আত্মহননকারীদের মধ্যে শিক্ষিত কতজন এবং তাদের আর্থিক অবস্থা কেমন ছিল সেটিও উল্লেখ করা হয়নি ওই প্রতিবেদনটিতে। সিডিসি কেবল বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রিহীন শ্বেতাঙ্গ লোকজনের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক পলিসি বিভাগের অধ্যাপক রবার্ট ডি পুটনাম নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকাকে বলেছেন,‘আত্মহত্যা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে দারিদ্রতা, হতাশা ও স্বাস্থ্য সঙ্কটের একটি যোগসূত্র রয়েছে।’

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.