আবুধাবি এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন জটিলতায় আটকে পড়া ১২৭ বাংলাদেশির মধ্যে ৬৮জনকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সোমবার বিমানের ফিরতি ফ্লাইটে তারা হযরত শাহজালাল আন্তজাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
বিমানবন্দরে নেমেই তারা কান্নায় ভেংগে পড়েন। সরকারের সহযোগিতা দাবি করতে গিয়ে তারা বিমানবন্দরে বিক্ষোভ করেন। তারা বলেন, লাখ লাখ টাকায় টিকিট কিনে তারা আবুধাবী গিয়েছিলেন। তারা জানতেন না তাদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। জমি জমা বিক্রি করে তারা বিমানের টিকিট কিনেছিলেন।
৩৮ হাজার টাকার টিকিট তাদেরকে কিনতে হয়েছে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকায়। কিন্তু এখন তাদের সব শেষ। এই অবস্থায় তারা বাড়িতে ফিরে গিয়ে কি করবেন এটা ভেবে কুল কিনারা করতে পারছেন না। তাদের এখন আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। এই অবস্থায় তারা দ্রুত সরকারের সহযোগিতা কামনা করছেন। তারা যাতে আবার তাদের কর্মস্থলে ফিরতে পারে সেজন্য এই সহযোগিতা চান।
জানাগেছে এই ৬৮ জন যাত্রী করোনাকালে শত ঝামেলা পেরিয়ে বিমানে চড়ে দেশটিতে গেলেও বিমান বন্দর থেকে বের হতে পারেননি তারা। পুনরায় তাদের দেশে ফিরে আসতে হবে। আটক যাত্রীরা আবুধাবি এয়ারপোর্টের হোটেলে অবস্থান করছেন। এদিকে ১২৭ জনের মধ্যে ৬৮ জন দেশে ফিরলেও বাকীদের কি অবস্থা সেটা জানা যায়নি।
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাংলাদেশ বিমান এবং এয়ার অ্যারাবিয়ার দুটি ফ্লাইট ১৫ আগস্ট ভোরে আবুধাবিতে অবতরণ করে। বিমানের ফ্লাইটে আসা ৭৭ জন এবং এয়ার অ্যারাবিয়ার ফ্লাইটে আসা ৫০ জন যাত্রীকে অ্যাডভানসেস প্যাসেঞ্জারস ইনফরমেশন (এপিআই) জটিলতায় এয়ারপোর্টে আটকে দেওয়া হয়। আটক বাংলাদেশিদের ছাড়াতে রাষ্ট্রদূত আবু জাফরের নির্দেশে দুই দিন ধরে চেষ্টার পরও ইতিবাচক ফলাফল মেলেনি। বরং আটকে পড়া ১২৭ যাত্রীকে বহনকারী স্ব স্ব উড়োজাহাজ কর্তৃপক্ষকে তাদের ফেরত নিয়ে যেতে বলা হচ্ছে।
আবুধাবি দূতাবাসের লেবার কাউন্সিলর আবদুল আলিম মিয়া বলেন, ‘আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। মানবিক দিক বিবেচনা করে বাংলাদেশিদের ছাড়ার অনুরোধও করেছি। কিন্তু একই সমস্যার কারণে ভারত, পাকিস্তান ও মিসরের যাত্রীদের এয়ারপোর্টে আটক করে রাখা হয়েছে। অন্যান্য দেশের যাত্রী থাকায় বাংলাদেশিদের ব্যাপারে তারা বিশেষ দৃষ্টি দেয়নি।’
তিনি আরো বলেন, ‘একটি দেশ থেকে যাত্রী অন্য দেশে যেতে হলে বোর্ডিং পাসের অনুমতি প্রয়োজন হয়। সিস্টেম জটিলতায় কিংবা কোনো কারণে দেশ থেকে ইস্যু করা এই যাত্রীদের বোর্ডিং রিপোর্ট আবুধাবি এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশনে পাওয়া যাচ্ছে না। সেকারণে এসব যাত্রীকে দেশটির অভ্যন্তরে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা প্রদান করা হয়েছে।’