নতুন ছয় আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এর মধ্যে পাঁচটি রুটের ফ্লাইট চলতি অর্থবছরের শীতকালীন সময়সূচিতে শুরুর পরিকল্পনা নিয়েছে বিমান। আর টোকিওতে ব্যবসায়িক সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে। উড়োজাহাজ সংগ্রহ ও ব্যবসায়িকভাবে লাভজনক মনে হলে ২০১৭ সালে গ্রীষ্মকালীন সময়সূচিতে টোকিও রুটে ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে বিমানের।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের শীতকালীন সময়সূচিতে গুয়াংজু, কলম্বো, মালে, দিল্লি ও হংকং রুটে বিমানের ফ্লাইট সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি যুক্ত হওয়া ১৬২ আসনের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ ‘ময়ূরপঙ্খী’ ও ‘মেঘদূত’ দিয়ে নিকট গন্তব্যের এসব রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করবে বিমান।
এরই মধ্যে গুয়াংজুতে বাজার জরিপের কাজ শেষ হয়েছে, যাতে রুটটি বিমানের জন্য লাভজনক উল্লেখ করা হয়েছে। রুটটি সম্প্রসারণের পদক্ষেপ হিসেবে ভারতের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ থেকে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমোদনও সংগ্রহ করেছে বিমান। পাশাপাশি গুয়াংজুতে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং চুক্তি ও ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সিও সংগ্রহ করা হয়েছে।
বাজার জরিপে দেখা গেছে, নতুন রুট হিসেবে কলম্বোও বিমানের জন্য সম্ভাবনাময়। এ বিবেচনায় শ্রীলংকার সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ থেকে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমোদন নিয়েছে বিমান। ফ্লাইট পরিচালনার প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ হিসেবে কলম্বোয় গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং চুক্তিও হয়েছে। বাজার জরিপের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা-কলম্বো ফ্লাইটটি মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নিয়েছে বিমান।
এ প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএম মোসাদ্দিক আহমেদ বলেন, লাভজনক রুট চিহ্নিতকরণ ও সেসব রুটে ফ্লাইট চালু করা বিমানের নিয়মিত কার্যক্রমেরই অংশ। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও রয়েছে।
তিনি বলেন, সব গন্তব্যের সম্ভাব্যতাই যাচাই করা হয়েছে। কমিটি এ বিষয়ে প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে। এ নিয়ে বিমানের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, নির্ধারিত সময়েই রুটগুলো চালু করা সম্ভব হবে।
এদিকে ১৯৯২ সাল থেকে ঢাকা-দিল্লি ও ১৯৯৩ সাল থেকে ঢাকা-হংকং রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে এলেও হজ ফ্লাইট নির্বিঘ্ন করতে ২০১৪ সাল থেকে এ দুটি রুটে ফ্লাইট সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। যদিও দিল্লি ও হংকংয়ে বিমানের অফিস, লোকবল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি বিদ্যমান রয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ দুই রুটেও চলতি অর্থবছরের শীতকালীন সময়সূচি থেকে ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা করছে বিমান।
উল্লেখ্য, গত মার্চে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সঙ্গে সচিবালয়ে এক বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা ঢাকা-দিল্লি রুটে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে আলোচনা করেন। সে সময় রাশেদ খান মেনন দিল্লি রুটের ফ্লাইট দ্রুত চালুর আশ্বাস দেন।
একসময় বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে সরাসরি আকাশপথে যোগাযোগ ছিল। বাংলাদেশ বিমানের ঢাকা-টোকিও রুটটি চালু হয় ১৯৭৯ সালে। ১৯৮১ সালে সাময়িক বিরতির পর তা আবার চালু হয়। তখন ঢাকা-নারিতা রুটে ফ্লাইটটি চলত। ১৯৯২ সালে এ ফ্লাইট নাগোয়া পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হয়। সেটিও পরে বন্ধ হয়ে যায়।