বিমান ভ্রমণ আরও বেশি উপভোগ্য করতে পাওয়া যায় নানা উপদেশ। তবে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি পরামর্শ হচ্ছে বিমানে আপনি কোন আসনটিতে বসবেন, সেটি সতর্কতার সঙ্গে বাছাই করা।
অনেকেই জানালার পাশের আসনগুলোতে বসতে চান, আবার অনেকে মাঝামাঝি আসনগুলোতে বসেন। ভ্রমণকারীরা নিজ নিজ পছন্দ অনুযায়ী বিমানের আসন নির্ধারণ করেন। জরুরি মুহূর্তের কথা বিবেচনা করে অনেকেই আবার বিমানের সামনের অংশে বসতে চান, যাতে বিপদের সময় দ্রুত বিমান থেকে বের হওয়া যায়।
তবে যারা বিপদ এড়াতে বিমানের সামনের অংশে বসতে চান, তারা তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারেন। এ সম্পর্কিত একটি গবেষণায় বিমানের সবচেয়ে নিরাপদ আসনের যে চিত্র বের হয়ে এসেছে, তাতে অনেকেই অবাক হবেন।
বিমানের সবচেয়ে নিরাপদ আসন কোনগুলো?
বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন বিমান শিল্পে ৩৫ বছরের দুর্ঘটনার তথ্য বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ২০১৫ সালে। দেখা গেছে, দুর্ঘটনায় বিমানের পেছনের দিকের মাঝামাঝি আসনগুলোতে বসা যাত্রীদের হতাহতের সংখ্যা সবচেয়ে কম, মাত্র ২৮ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নিরাপদ আসনগুলো হচ্ছে বিমানের মাঝ বরাবর মাঝামাঝি আসনগুলো। এই আসনগুলোতে বসা যাত্রীদের হতাহতের পরিমাণ ৪৪ শতাংশ। বিমানযাত্রীরা সাধারণত বিমানের পেছনের এবং মাঝামাঝি অংশের এই আসনগুলোতে বসতে চান না। তবে টাইমের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আসনগুলোর নিরাপত্তা সুবিধা বেশি।
এই আসনগুলো আসলে বেশি নিরাপদ হওয়াটাই যৌক্তিক। পেছনের দিকের আসনগুলো থেকে জরুরি মুহূর্তে বিমান থেকে বের হওয়ার দরজা খুব কাছে। আবার বিপদের সময় হুড়োহুড়ি থেকে যে সংঘর্ষ বাধে কিংবা পদদলিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, পেছনের আসনগুলোতে সেই সম্ভাবনাও অনেক কম। তা ছাড়া এই আসনগুলো বিমানের জ্বালানি সংরক্ষণাগারের চেয়েও দূরে।
বিমান ভ্রমণ কতটা নিরাপদ?
সব ধরণের পরিবহনের মধ্যে বিমান পরিবহন অন্যতম নিরাপদ। ফ্লাইটরাডার২৪-এর ২০১৯ সালের তথ্য অনুসারে, সে বছর বিশ্বব্যাপী ৭ কোটিরও বেশি ফ্লাইট পরিচালিত হয়েছে যার মধ্যে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে মাত্র ২৮৭ জন। সড়ক যোগাযোগ ও দুর্ঘটনার সঙ্গে তুলনা করলে এ সংখ্যা একেবারেই নগন্য। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেফটি কাউন্সিলের তথ্য অনুসারে বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার সম্ভবনা প্রতি ২ লাখ ৫ হাজার ৫৫২ জনে মাত্র একজন। আর সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে এই হার প্রতি ১০২ জনে ১ জন। তাই বিামন ভ্রমণ অত্যন্ত নিরাপদ, এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।