পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা করার দাবি

দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতা বিবেচনায় ও নিজেদের মর্যাদাপূর্ণ জীবনের কথা চিন্তা করে ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকরা।

আজ রোববার নিম্নতম মজুরি বোর্ডে স্মারকলিপি পেশপূর্বক সমাবেশে এই দাবি জানান তারা। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করেছে সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।

সংগঠনের সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি বহুবিধ যুক্তি ও ন্যায্যতা বিবেচনায় নিয়ে শ্রম আইনের ১৩৯ ধারা মোতাবেক প্রতি ৫ বছর অন্তর নিম্নতম মজুরি হার বৃদ্ধির সুপারিশ ও বাস্তবায়নের বিধান রয়েছে।

যার প্রথম ধাপ হিসাবে ইতোমধ্যে একটি নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠিত হয়েছে এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৫ ডিসেম্বর গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য নিম্নতম মজুরি ঘোষণা করা হয়।

তিনি বলেন, নিম্নতম মজুরি ঘোষণার পর গত ৫ বছরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ, বাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ আরো অন্যান্য খরচ আকাশচুম্বী হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে শ্রমিকদের জীবনযাত্রা চরম আকারে ব্যাহত হচ্ছে। সে তুলনায় শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি পায়নি।

পোশাক রপ্তানিকারক বিভিন্ন প্রতিযোগী দেশের তুলনায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের বেতন বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন বলে দাবি করেন এ শ্রমিক নেতা।

তিনি আরও বলেন, সিপিডির গবেষণা অনুযায়ী, ৪ সদস্যের একটি পরিবারের মাসিক খরচ ৪৭ হাজার ১৮২ টাকা। জাতিসংঘের গবেষণায়, ৪১ হাজার ৪০০ টাকা। বিশ্ব ব্যাংকের গবেষণায়, দারিদ্রসীমার ঊর্ধ্বে উঠতে হলে মাথাপিছু প্রতিদিন ২ ডলার আয় করতে হবে। সে হিসাবে কমপক্ষে ১ জন শ্রমিককে সর্বনিম্ন ৩২ হাজার ১০০ টাকা মাসিক আয় করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, তফশিলি ব্যাংকের সর্বনিম্ন বেতন ২৯ হাজার টাকা। শিক্ষানবিশকালীন ২৮ হাজার এবং অফিস সহকারী নিরাপত্তা প্রহরী ও পরিচ্ছন্নকর্মীদের বেতন ২৪ হাজার টাকা ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ দেশ ও শিল্পের উন্নয়নে সবচেয়ে বড় অবদান রাখা পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত ও অবহেলিত। তাই দেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতা ও এই খাতের শ্রমিকদের মর্যাদাপূর্ণ জীবনের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে ২৩ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হোক।

এ সময় সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাদিজা আক্তারসহ অর্ধশতাধিক গার্মেন্টস কর্মী উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে তারা নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি দিতে যান।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.