লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে একের পর এক বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। প্রাণ বাঁচাতে সেখানকার বাসিন্দারা বৈরুতের সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় আশ্রয় নিচ্ছে। পালিয়ে এসব মানুষের কেউ বলেছেন তারা এখানে রাত কাটাবেন, আবার কেউ বলেছেন তারা কোথায় থাকবেন তা নিশ্চিত নন। এখানে আসার চিন্তাও করেনি, তারা কেবল জানে পালাতে হবে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ভিডিও ও ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বিপুলসংখ্যক মানুষ সমুদ্রের ধারে ফুটপাথে তোশক বা গামছা বিছিয়ে অবস্থান করছে। কেউ সমুদ্রের দিকে মুখ করে প্লাস্টিকের চেয়ার বসে আছে বা কফি পান করছে বা পাইপ ফুঁকছে। অন্যদিকে ছেলেমেয়ের দল দৌড়াদৌড়ি ও খেলাধুলা করছে।
সিরিয়ার দেইর আজ-জোর থেকে আসা ২৪ বছর বয়সী আয়মান আল জাজিরাকে বলেন, বৈরুতের ঘনবসতিপূর্ণ দক্ষিণ শহরতলী দাহিয়েহ-এ ‘আর কেউ অবশিষ্ট নেই’।
সবাই চলে যাচ্ছে। যার গাড়ি নেই সে স্কুটারে করে পালিয়ে যাচ্ছে, যার স্কুটার নেই সে পায়ে হেঁটে পালিয়ে যাচ্ছে, বলেন এই তরুণ।
আয়মান আরও একদল সিরীয় লোকের মাঝে বসেছিলেন যারা সমুদ্রের তীরে এসেছিল কারণ তাদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা ছিল না। তাদের মধ্যে কয়েকজন বলেছে, তারা সিরিয়ায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করবে। বাঁকা হাসি দিয়ে একজন বললেন, ‘আমি ফুটপাথে ঘুমাব। বালু ঠাণ্ডা হয়ে গেছে।’
কেউ কেউ হাস্যরসের মাধ্যমে চাপ মোকাবেলা করেছিলেন, অন্যরা ভয়ে আরও বিচলিত হয়েছিলেন। সৈকতের উল্টোদিকের ফুটপাথে বসা এক তরুণী এতটাই ভয় পেয়েছিলেন যে বমি করতে শুরু করেছিলেন।
সপরিবারে সমুদ্রের ধারে বসা এক লোক বলেন, তারা ১১ মাস আগে দক্ষিণাঞ্চলীয় বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে পালিয়ে গিয়েছিলেন। আজ রাতে তারা আবার পালিয়ে এসেছেন।
গত সপ্তাহ থেকে লেবাননের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে একের পর এক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গতকাল শুক্রবার রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণে ঘনবসতিপূর্ণ শহর দাহিয়েহসহ লেবাননের বিভিন্ন জায়গায় রাতভর হামলা চালায় ইসরায়েল। বিশেষ করে হিজবুল্লাহর সদর দপ্তর ও শীর্ষ কমান্ডারদের লক্ষ্য করে হামলা চালায় দখলদার দেশটি। এতে দুই কমান্ডারদের সঙ্গে নিহত হয়েছেন হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ।