যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় এক কোটি ১০ লাখের মতো অভিবাসীর বৈধ কাগজ নেই। অনেক দিন ধরে বাস করার পরও তাঁরা নাগরিকত্ব পাননি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অন্যতম ভোটব্যাংক এই অবৈধ অভিবাসী ইস্যুকেই তুরুপের তাস বানাতে তৎপর আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক হিলারি ক্লিনটন।
নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হতে প্রত্যাশী হিলারি অভিবাসী আইন সংস্কারের পদক্ষেপের নিতে আহ্বান জানিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ রিপাবলিকানদের বিপরীতে কট্টর অবস্থান নিয়েছেন তিনি।
আজ বুধবার খবরে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী নাগরিকদের জ্ন্য দীর্ঘ দিন ধরে সমর্থন দিয়ে আসছেন হিলারি। বিশেষ করে সেখানে বেড়ে ওঠা তরুণদের জন্য, যারা ছায়া থেকে বেরিয়ে আসার স্বপ্ন দেখছে।
গতকাল মঙ্গলবার লাস ভেগাসে রাঞ্চো হাই স্কুলে এক গোলটেবিল আলোচনায় ক্লিনটন বলেন, ‘সমতাভিত্তিক ও পূর্ণ নাগরিকত্বের জন্য আমরা আর অপেক্ষা করতে পারি না। এ ব্যাপারে রিপাবলিকান প্রত্যেকের চেয়ে আমার অবস্থান ভিন্ন। আপনারা ভুল করবেন না, বর্তমানে রিপাবলিকান এমন কেউ নেই যে যিনি নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টিকে সমর্থনের বিষয়টিকে পরিষ্কারভাবে ঘোষণা দিয়েছেন বা ধারাবাহিকভাবে সমর্থন দেওয়ার কথা বলেছেন। এমন একজনও নেই।’ রিপাবলিকানদের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘তারা যে আইনগত মর্যাদা দিতে চায়, সেটা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকত্ব।’
লাস ভেগাস যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা অঙ্গরাজ্যের প্রধান নগরী। অঙ্গরাজ্যটির ২৭ শতাংশ লোকই হিসপানিক। ওই বিতর্কে কিছু সংখ্যক অবৈধ অভিবাসী অংশ নেয়। তাদের কাউকে সাময়িক ভিসা দেওয়া হয়েছে, আবার কারও বাবা-মাকে অবৈধ অভিবাসীর তালিকায় রাখা হয়েছে।
নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারকারী অত্যন্ত স্পর্শকাতর অভিবাসী আইনটি এখন কংগ্রেসে ঝুলে আছে। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয়ই অধিক সংখ্যক অবৈধ অভিবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের ব্যাপারে একমত। কিন্তু ভিসায় কোটা ব্যবস্থার ব্যাপারটিতে দ্বিমত রয়েছে।
ডেমোক্র্যাটস নিয়ন্ত্রণাধীন সিনেট ২০১৩ সালে অভিবাসী সংস্কারের একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করে। কিন্তু প্রতিনিধি পরিষদে তা আটকে দেয় সংখ্যাগরিষ্ঠ রিপাবলিকানরা। রিপাবলিকানদের দাবি, মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্ত পুরোপুরি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত অভিবাসন নীতির কোনো সংস্কার হবে না।
গত নভেম্বরে নির্বাহী ক্ষমতার মাধ্যমে কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে ওবামা অভিবাসীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেন। এতে ৪০ লাখের মতো অবৈধ অভিবাসী দেশান্তরিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায়। তবে ওবামা কংগ্রেসকে পাশ কাটানোয় বেজায় চটেছে রিপাবলিকানরা।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ওবামার নেওয়া ব্যবস্থা কার্যকর হওয়ার আগ মুহূর্তে টেক্সাসের একটি আদালত এর ওপর জরুরি স্থগিতাদেশ দেয়। এতে অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টি ঝুলে যায়।
প্রেসিডেন্ট হলে অভিবাসনের ব্যাপারে করণীয় কাজ সম্পর্কে হিলারি বলেন, ‘কংগ্রেস যদি প্রত্যাখ্যান করে যেতেই থাকে, এরপরও বিষয়টিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে আইনগতভাবে সম্ভাব্য সবই করব।’
হিলারির এই হাতিয়ার তাঁর হোয়াইট হাউস যাত্রাকে কতটা মসৃণ করতে পারবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
আরও খবর