স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
যশোরে জান্নাতুল ফেরদৌস নামে এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে স্বামী আশফারুর রহমান ওরফে শহীনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
অপর আসামি শাহীনের বোন লাভলীর বিরুদ্ধে অভিযোগে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ (জেলা জজ) এর বিচারক টিএম মুসা এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি আশফাকুর রহমান ওরফে শাহীন ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের জগন্নাথপুর গ্রামের কুবেদ আলীর ছেলে ও যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোড এলাকার তৎকালীন ভাড়াটিয়া বাসিন্দা।
সরকারপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন বিশেষ পিপি এম ইদ্রিস আলী।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ৮ অক্টোবর আসামি শাহীন মাগুরার শহরের মিয়াবাড়ি আদর্শপাড়ার মরহুম সৈয়দ ইসমাইল হোসেনের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই শাহীন পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে জান্নাতুল ফেরদৌসের ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে।
শাহীন তার স্ত্রী ও বোন লাভলীকে নিয়ে যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। শাহীন তার স্ত্রীর কাছে যৌতুকের টাকা দাবি করে না পাওয়ায় ওই বছরের ২ নভেম্বর রাত ৩টার সময় তার জান্নাতুল ফেরদৌসের গায়ে কেরাসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ফেরদৌসের মৃত্যু হয়। এ সময় শাহীন তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসের মরদেহ হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় নিহত জান্নাতুল ফেরদৌসের মা কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শাহীন ও তার বোন লাভলীকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আসামি শাহীনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত শাহীন পলাতক রয়েছে।