চট্টগ্রাম: জাল সনদ ব্যবহার করে চাকুরি করার অভিযোগে বাঁশখালী উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাত শিক্ষকের বিরুদ্ধে পৃথক সাতটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার দুদক সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-২ এর উপ-সহকারি পরিচালক মো. ওয়াহিদুজ্জামান বাদি হয়ে বাঁশখালী থানায় মামলাগুলো দায়ের করেছেন। মামলা নম্বর ৪০, ৪১, ৪২, ৪৩, ৪৪, ৪৫ ও ৪৬।
মো. ওয়াহিদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, সাত শিক্ষক সাতটি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। স্কুলগুলো সরকারি অধিভুক্ত হবার পর তারা ভূয়া সিইনএড সনদ দিয়ে চাকুরি করে আসছিলেন। জাল সনদ দিয়ে শিক্ষকরা তিন হাজার টাকা থেকে ২১ হাজার টাকা পর্যন্ত সরকারি অনুদানের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, পৃথকভাবে সাতটি মামলার মধ্যে একটি মামলায় বাঁশখালীর উত্তর নাপোড়া রেজিস্টার্ড (তৎকালীন) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মীর জহিরুল হকের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের জুলাই থেকে ২০১২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৪১ মাসে আট হাজার দু’শ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বাঁশখালীর নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড (তৎকালীন) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুল হাকিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১১ সালের মার্চ পর্যন্ত ১৫ মাস ১০ দিনে তিন হাজার ৬০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বাঁশখালীর সেলবন রেজিস্টার্ড (তৎকালীন) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোক্তার আহমেদের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৩৫ মাসে সাত হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বাঁশখালীর শেখেরখীল রেজিস্টার্ড (তৎকালীন) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শহীদুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের মার্চ থেকে ২০১২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৪৫ মাসে নয় হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বাঁশখালীর মধ্য বড়ঘোনা রেজিস্টার্ড (তৎকালীন) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আবু সামা মো. ইউসুফের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের আগস্ট থেকে ২০১২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৪০ মাসে আট হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বাঁশখালীর গন্ডামারা রেজিস্টার্ড (তৎকালীন) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ আহমেদের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১০৫ মাসে ২১ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সর্বশেষ বাঁশখালীর উত্তর নাপোড়া রেজিস্টার্ড (তৎকালীন) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শফিউল্লাহ আজমি’র বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের জুলাই থেকে ২০১২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৪১ মাসে ৮ হাজার দু’শ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সূত্রমতে, ২০১২ সালে অভিযোগ পাবার পর শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে (অনুসন্ধান নম্বর-১০/২০১২) দুদক। তিন বছর তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।