চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি পাচ্ছে ভারত

iঢাকা: ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরে মমতা ব্যানার্জির আপত্তিতে তিস্তা চুক্তির সঙ্গে থেমে যায় আরও একটি চুক্তি। সেটি হলো চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারে অনুমতি বিষয়ক সম্মতিপত্র।

ওই সফরে এ দুটি বন্দর ব্যবহারে বাংলাদেশকে রাজি করাতে না পারলেও এবার সে অনুমতি পাচ্ছে প্রতিবেশী দেশটি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন বাংলাদেশ সফরে আবারও নতুন করে সম্মতিপত্র স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ তৈরিতে প্রকল্পও হাতে নেওয়া হচ্ছে।

পররাষ্ট্র ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

মোদির সফর নিয়ে এ পর্যন্ত হওয়া সবগুলো আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আগামী রোববার নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে আরও একটি আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠক ডাকা হয়েছে।

জানা যায়, ২০১০ সালের দিল্লি সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতকে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করতে দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হন। সে সফরেই তিনি ভারতের ভূখন্ড ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার আগ্রহের কথা ভারতকে জানান। সে অনুযায়ী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের সম্মতিপত্র স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাঁধ সাধে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ কানেকটিভিটির বিষয়কে বিশেষভাবে জোর দিয়ে আসছে। ভারতকে এ অনুমতি দিলে এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোও যোগাযোগের কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশকে বিবেচনা করবে। যা অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য লাভজনক হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা  জানান, প্রায় চার দশকের অমিমাংসিত স্থল সীমানাচুক্তি বিষয়ক সমস্যা ভারত সমাধান করে দিয়েছে। তিস্তার বিষয়েও দেশটির সরকারের ইতিবাচক মনোভাবের দেখা মিলেছে। এমন সময় বাংলাদেশও কিছুটা উদারতা দেখাবে, এটাই স্বাভাবিক।

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ত্রিপুরার সাবব্রুম পর্যন্ত সরাসরি যোগাযোগের জন্য প্রায় শতকোটি টাকা ব্যয়ে ফেনী নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। রেল সংযোগ হচ্ছে আখাউড়া থেকে আগরতলা পর্যন্ত। এই রেলপথে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় মালামাল পরিবহন করা সম্ভব হবে। এ সুবিধা শুধু ত্রিপুরাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। সেভেন সিস্টার্স খ্যাত ভারতের সাতটি রাজ্যই চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে সরাসরি আমদানি-রফতানির সুবিধা নিতে পারবে।

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আখাউড়া-সিলেট হয়ে কমিরগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে সরাসরি মেঘালয়ে যেতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথটিকে পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ প্রকল্পের মোট ব্যয়ের সিংহভাগ ঋণ হিসেবে ভারত দেবে বলে জানা গেছে।

খুলনা থেকে মংলা পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যার ফলে মংলা সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি মংলা থেকে সরাসরি পশ্চিমবঙ্গ যাওয়ার পথ তৈরি হবে।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.