একদিন থামতে হবে কবে জানেন না ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।
৩৪ বছর বয়সেও দাপটের সঙ্গে খেলে চলেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। অন্তত এখন পর্যন্ত তার পারফরম্যান্সে বয়সের ছাপ পড়েনি। জুভেন্টাসের জার্সিতে অভিষেক মৌসুমে করেছেন ২৮ গোল। কিছুদিন আগে ঘোষণা দিয়েছেন, জুভেন্টাসকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতিয়েই ছাড়বেন তিনি। তবে বয়সকে অগ্রাহ্য করে যতই খেলে যান না কেন, একদিন তাকেও থামতে হবে।
সেই দিনটা আসতে পারে আগামী বছরই! না, অবসরের ভাবনা এখনও পেয়ে বসেনি পর্তুগিজ মহাতারকাকে। তবে প্রাণপ্রিয় খেলাটা বরাবরের মতো উপভোগ করতে না পারলে হুট করেই ফুটবলকে বিদায় জানিয়ে দিতে পারেন রোনাল্ডো।
মঙ্গলবার পর্তুগালের টিভিআইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানালেন সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার, ‘অবসর নিয়ে আমি ভাবি না। এমনও হতে পারে, আগামী বছরই ক্যারিয়ারের ইতি টেনে দিলাম। আবার ৪০-৪১ বছর বয়স পর্যন্তও খেলা চালিয়ে যেতে পারি। শেষ পর্যন্ত কী হবে আমি আসলেই তা জানি না। আমি খেলাটা উপভোগ করি। যতদিন উপভোগ করত পারব, খেলে যাব।’
এক বিশ্বকাপ বাদে সবকিছুই জেতা হয়ে গেছে রোনাল্ডোর। তবু সেই আগের উদ্যোমেই খেলে যাচ্ছেন। একের পর এক রেকর্ড গড়ে যাচ্ছেন। পিছিয়ে নেই তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসিও। কিন্তু রেকর্ডের রাজ্যে নিজেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বীই ভাবেন রোনাল্ডো, ‘পৃথিবীতে আর কোনো ফুটবলার কী আমার চেয়ে বেশি রেকর্ড গড়েছে? আমার অন্তত জানা নেই। আমার মনে হয় না যে, আমার চেয়ে বেশি রেকর্ড কারও আছে।’
একসময় বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলারের রেকর্ডটিও রোনাল্ডোর দখলে ছিল। ২০০৯ সালে রেকর্ড ৯৪ মিলিয়ন ইউরো ট্রান্সফার ফি’তে ম্যানইউ থেকে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়েছিলেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। সেই রেকর্ড অনেক আগেই ভেঙে গেছে। উঠতি তারকাদের দামও এখন ১০০ মিলিয়ন ইউরোর বেশি।
অতি মূল্যায়িত খেলোয়াড়দের এমন লাগামছাড়া দামে একটু যেন বিরক্তই রোনাল্ডো, ‘এখন যে কোনো খেলোয়াড়ের দামই ১০০ মিলিয়নের বেশি হতে পারে। যাদের অনেকেই এতটা দামি হওয়ার মতো কিছুই করেনি। ফুটবলে এখন অর্থের ছড়াছড়ি। সাধারণ একজন ডিফেন্ডার বা গোলকিপারও ৮০ মিলিয়নে বিক্রি হচ্ছে। আমি এর সঙ্গে একমত নই। কিন্তু এটাই বাস্তবতা এবং আমাদের তা মেনে নিতে হবে।’
দীর্ঘ সাক্ষাৎকারের শেষভাগে রোনাল্ডো কথা বলেছেন একটি অস্বস্তিকর প্রসঙ্গে। ধর্ষণের মামলা থেকে সম্প্রতি রেহাই পেলেও বিষয়টি তার জীবনকে বিষিয়ে তুলেছিল বলে জানালেন রোনাল্ডো, ‘ব্যক্তিগত পর্যায়ে ২০১৮ সাল ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন বছর। যখন মানুষ আপনার সম্মান নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তা প্রচণ্ড কষ্ট দেয়। এটা আমাকে আরও বেশি আহত করেছে। কারণ বড় একটি পরিবার, একজন জীবনসঙ্গী ও খুব বুদ্ধিমান একটি সন্তান আছে আমার, যে এখন অনেক কিছুই বোঝে। এ নিয়ে কথা বলাটাও বিব্রতকর। তবে শেষ পর্যন্ত আমি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছি। এ নিয়ে আমি গর্বিত।’