ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে হিলারি

Donald1465654857জনসমর্থনে হিলারি ক্লিনটন স্পষ্ট ব্যবধানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন। জরিপের তথ্যানুযায়ী, এ ব্যবধান ১১ পয়েন্ট।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে প্রার্থিতা নিশ্চিত হওয়ার পর জনসমর্থনের জরিপে ট্রাম্পের চেয়ে আরো এগিয়ে গেছেন হিলারি। গত মাসের একটি জরিপের ফলে দেখা যায়, হিলারি-ট্রাম্পের ব্যবধান কমে আসছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রধান দুই দলের প্রার্থী বাছাই এক পর্যায়ে চূড়ান্ত হয়েছে। এখন জুলাইয়ে অনুষ্ঠেয় জাতীয় কনভেনশনে তাদের নাম আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়াই যা বাকি আছে। দুই প্রার্থীকে কেন্দ্র করে দুই দল নির্বাচনী লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে ৮ নভেম্বর।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও জরিপ সংস্থা ইপসোস শুক্রবার হিলারি-ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা অর্থাৎ জনসমর্থনের ভিত্তিতে একটি জরিপের ফল প্রকাশ করে। গত সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত অনলাইনে এ জরিপ চালানো হয়।

জরিপের ফলে দেখা যাচ্ছে, ৪৬ শতাংশ ভোটার হিলারিকে সমর্থন করছেন। বিপরীতে ট্রাম্পকে সমর্থন করছেন ৩৪ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটার। ১৯ দশমিক ২ শতাংশ ভোটার এ দুজনের কাউকে পছন্দ করছেন না।

জরিপে অংশ নেন ১ হাজার ২৭৬ জন উত্তরদাতা। জরিপের সঠিকতা শতকরা ৩ দশমিক ২ শতাংশ হেরফের হতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে।

দলীয় প্রার্থী হিসেবে ট্রাম্পের প্রার্থিতা নিশ্চিত হওয়ার পর তার জনপ্রিয়তা ঊর্ধ্বমুখী হয়। এ সুযোগে হিলারির চেয়ে ট্রাম্পের জনসমর্থনের ব্যবধান কিছুটা কমে আসে। তবে বর্তমানে হিলারির দিকেই জনসমর্থনের পাল্লা ভারি।

৬৯ বছর বয়সি ট্রাম্প নানাভাবে চেষ্টা করছেন তার প্রতিপক্ষ দলের প্রতিদ্বন্দ্বী ৬৮ বছর বয়সি হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তার করতে। নিউ ইয়র্কের ধনকুবের ব্যবসায়ী ট্রাম্প প্রার্থী বাছাই পর্বে বিতর্কিত মন্তব্য করে জনগণের দৃষ্টিতে এলেও একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি হিলারির তুলনায় কতটা যোগ্য, তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

প্রাক্তন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বের পছন্দের প্রার্থী। দলের নীতিনির্ধারণী নেতা হিসেবে যারা সুপারডেলিগেট হিসেবে বিবেচিত, তাদের অধিকাংশের সমর্থন পেয়েছেন তিনি। তা ছাড়া হিলারিকে সমর্থন করছেন বড় বড় দাতারা, যাদের দানের অর্থে গড়ে উঠছে হিলারির নির্বাচনী ব্যয় তহবিল।

দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী বার্নি স্যান্ডার্সকে (৭৪) গত সপ্তাহে পরাজিত করেন হিলারি। একই দিনে ছয় রাজ্যের প্রাইমারি ও ককাসে চারটিতে হেরে যান স্যান্ডার্স। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ায় হেরেই মূলত বাছাই পর্ব থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। এ রাজ্যের পাঁচ শতাধিক ডেলিগেটের সমর্থন পেয়ে প্রার্থিতা নিশ্চিত করেন হিলারি।

ক্যানিফোর্নিয়ায় জয়ের পর প্রেসিডেন্ট ওবামা আনুষ্ঠানিকভাবে হিলারি ক্লিনটনকে সমর্থন দেন। একইসঙ্গে ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ম্যাসাচুসেটসের প্রভাবশালী সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেনেরও সমর্থন পান তিনি। দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতারও অকপট সমর্থন এখন হিলারির পক্ষে।

নিজের নামে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন- এমন অভিযোগে এখন দলের মধ্যেই জবাবদিহির কাঠগড়ায় ট্রাম্প। এ ছাড়া রিয়েল স্টেট ব্যবসাতেও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সব মিলিয়ে দলে ও বাইরে নানামুখী চাপের মধ্যে রয়েছেন ট্রাম্প।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ২২৭ বছরের ইতিহাসে হিলারি ক্লিনটন প্রথম কোনো নারী হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থিতা নিশ্চিত করেছেন। এর আগে কোনো নারী এ পদে প্রার্থী হতে পারেননি। নির্বাচনে জয়ী হলে তিনিই হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট, যা হবে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অনন্য সাধারণ ঘটনা।

২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে চমক দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হন বারাক ওবামা। পরপর দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে হোয়াইট হাউস ছাড়বেন ওবামা।

আরও খবর
আপনার কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published.